আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৭ জুন, ২০১৫ ০৪:২০

তিউনিসিয়ায় হোটেলে সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ৩৭

তিউনিসিয়ার সাগরতীরের পর্যটকদের হোটেলে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ৩৭ জন নিহত হয়েছে।

শুক্রবার রাজধানী তিউনিস থেকে প্রায় দেড়শ কিলোমিটার দক্ষিণে সুস শহরের ইম্পেরিয়াল মারহাবা হোটেলে এই হামলায় আরও ৩৬ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

নিহতদের বেশির ভাগই বিদেশি পর্যটক, যাদের মধ্যে তিউনিসিয়াসহ, ব্রিটিশ, জার্মান এবং বেলজিয়ামের নাগরিক রয়েছে।

পর্যটকের ছদ্মবেশে থাকা বন্দুকধারীর গুলিতে আতঙ্কে ছুটোছুটি শুরু করে পর্যটকরা। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুযুদ্ধে নিহত হয় এক হামলাকারী। আরেক বন্দুকধারী গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।

পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় সুস শহরের ওই হোটেলে হামলার সময় অনেক পর্যটক অবস্থান করছিলেন।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘একটি সন্ত্রাসী হামলা চলেছে’।

অবকাশযাপনে থাকা এক ব্রিটিশ নাগরিক কাছেই আরেকটি হোটেলে হামলার শব্দ শুনতে পেয়েছেন বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন।

“তিনি তার রুম থেকে পিস্তল হাতে একজনকে দেখতে পেয়েছেন বলে জানান। তবে ওই ব্যক্তি হামলাকারী নাকি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য তা জানা যায়নি।”

ইম্পেরিয়াল মারহাবা হোটেলের এক কর্মচারী রয়টার্সকে বলেন, “একজন হামলাকারী কালাশনিকভ হাতে হোটেলের যেসব পর্যটক ও স্থানীয়রা সৈকতে ছিলেন, তাদের উপর এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। হামলাকারী বয়সে তরুণ এবং শর্টস পরে ছিলেন। তাকেও একজন পর্যটক মনে হচ্ছিল।”

এখন পর্যন্ত এ হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি। কিন্তু এর আগে ইসলামপন্থি জঙ্গিরা উত্তর আফ্রিকার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে হামলা করেছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন আয়ারল্যান্ডের এলিজাবেথ ও’ব্রিয়েন। দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি পাশের একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন।

ঘটনার বর্ণনা করে তিনি বলেন, “সত্যি বলতে প্রথমে আমি ভেবেছিলাম আতশবাজি ফোটানো হচ্ছে। এরপর যখন আমি দেখলাম লোকজন ছুটোছুটি করছে…বুঝতে পারলাম, হা ঈশ্বর, আসলে গুলি চলছে।

“সৈকতে থাকা হোটেলের কর্মী ও নিরাপত্তারক্ষীরা দৌড়াও দৌড়াও বলে চিৎকার করছিল।”

উত্তর আফ্রিকার এ দেশটিতে বছরের দ্বিতীয় বড় ধরনের জঙ্গি হামলার ঘটনা এটি। মার্চে তিউনিসের একটি জাদুঘরে বন্দুকধারীদের হামলায় ২২ জন নিহত হয়, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিদেশি পর্যটক ছিল।

ওই হামলার পর তিউনিসিয়ায় জঙ্গি হামলার বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়।

২০১১ সালে ‘আরব বসন্তের’ পর গণতান্ত্রিক রূপান্তরের ক্ষেত্রে তিউনিসিয়া একটি আদর্শ দেশ হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে। আরব বিশ্বে সবচেয়ে ধর্ম নিরপেক্ষ দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে।

দেশটির সৈকতের রিসোর্ট ও নাইট ক্লাবগুলো ইউরোপীয় পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত