আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৩ এপ্রিল, ২০২০ ১৩:১৮

করোনা মোকাবেলার দেশবাসীর কাছে ৯ মিনিট সময় চাইলেন মোদী

দেশের লোকের কাছ থেকে এ বার নয় মিনিট সময় চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আবেদন, আগামী রোববার রাত নয়টার সময় ঘরের সব বাতি বন্ধ করে, নিজের বাড়ির বারান্দা বা ঘরের দরজায় এসে মোমবাতি বা প্রদীপ অথবা মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে নয় মিনিট থাকতে হবে।

মোদী বলেছেন, এতে দেশের ১৩০ কোটি লোকের সামগ্রিক শক্তির প্রকাশ ঘটবে। লোকে নিজেকে একা ভাববেন না। বরং সকলে ভরসা পাবেন। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই জোরালো হবে। সেই সঙ্গে অন্ধকার কেটে গিয়ে আলোর বার্তা দেওয়া যাবে।

সংস্কৃত শ্লোক উদ্ধৃত করে মোদী বলেছেন, উৎসাহের চেয়ে বড় কোনও শক্তি বিশ্বে নেই। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, প্রত্যেকের কাছে আমার আরও একটি প্রার্থনা আছে। এই কর্মসূচির সময় কেউ কোথাও জমায়েত হবেন না। প্রত্যেকে তার নিজ বাড়ির দরজা, জানালা বা বারান্দায় আলো হাতে থাকবেন। বাড়ির বাইরে পা না দেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই করোনার বিরুদ্ধে লড়া সম্ভব।  সামাজিক দূরত্বের লক্ষণরেখা অবশ্যই মেনে চলতে হবে, বলেছেন তিনি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার বার্তায় বলেন, এই লকডাউনে আমরা একা নই, প্রত্যেকের সঙ্গে ভারতের ১৩০ কোটি মানুষের সম্মিলিত শক্তি আছে।

করোনাভাইরাস বিরুদ্ধে নির্দেশনা ও প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সরকারের পদক্ষেপ জানাতে এ নিয়ে তৃতীয়বার দেশবাসীর সামনে হাজির হলেন মোদী। প্রথমবারে একদিনের জন্য ‘জনতা কারফিউ’র ডাক দিয়েছিলেন তিনি। সেবার সারাদিন ঘরবন্দি থাকার পর অনেক এলাকায় মানুষের জমায়েত ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করেছিল। দ্বিতীয় ভাষণে দেশজুড়ে ২১ দিনের লকডাউনের ঘোষণা দেন মোদী।

এই অন্ধকারের বিরুদ্ধে আমরা একসঙ্গে লড়বো। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষরা। এই অন্ধকার অতিক্রমে আমাদের একসঙ্গে আলো জ্বালতে হবে। করোনাভাইরাসের অন্ধকার যেন আমাদের ছড়ানো আলোর মুখোমুখি হয় তা নিশ্চিত করুন, শুক্রবারের ভাষণে বলেন মোদী।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের দেওয়া লকডাউন ও সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা মেনে চলতে একের পর এক টুইটও করেছেন ভারতের এ প্রধানমন্ত্রী। ঘরে থাকা অবস্থায় যোগব্যায়াম করতেও উৎসাহ দিচ্ছেন এ বিজেপি নেতা।

বৃহস্পতিবার বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে এক বৈঠকে মোদী লকডাউনের পর লোকজনের চলাচল সীমিত ও অর্থনীতির চাকা চালু রাখতে সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার পরিকল্পনা করতেও অনুরোধ করেছেন।

ডিসেম্বরের শেষদিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র দাপিয়ে বেড়ালেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতেও ভাইরাসটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে।

ভারতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দুই হাজার ৩০১ জনের দেহে করোনভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬ তে।

এর মধ্যে কেবল বৃহস্পতিবারই ৩৩৬ নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে, মারা গেছে ৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১৫৭ জন চিকিৎসা শেষে সেরে উঠেছে বলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত