সিলেটটুডে ডেস্ক

০৬ ফেব্রুয়ারি , ২০২৩ ১১:০১

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক যুদ্ধাপরাধী মাহমুদ ফকির গ্রেপ্তার

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সুলতান মাহমুদ ফকিরকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

ময়মনসিংহ র‍্যাব-১৪ সদর দপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন রোববার রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘ত্রিশাল এলাকার কুখ্যাত রাজাকার কমান্ডার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কর্তৃক গণহত্যা, হত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মৃত্যুণ্ডাদেশপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী সুলতান মাহমুদ ফকিরকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

এরআগে গত ২৩ জানুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ত্রিশালের ছয়জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এ মামলায় মোট আসামি ছিলেন নয়জন। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন দুজন। কারাগারে থাকা দুজন ও পলাতক একজনসহ মোট তিনজন মারা গেছেন। বাকি ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মোখলেছুর রহমান মুকুল, সাইদুর রহমান রতন, শামসুল হক ফকির, নুরুল হক ফকির, সুলতান মাহমুদ ফকির ও নকিব হোসেন আদিল সরকার।

গত ২৩ জানুয়ারি রায় ঘোষণার সময় আসামিরা সবাই পলাতক ছিলেন। এরমধ্যে ৩০ জানুয়ারি মোখলেছুর রহমান মুকুল ও নকিব হোসেন আদিল সরকারকে রাজধানীর দক্ষিণখান ও সাভারের আশুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-২। পরে তাদের কারাগারে পাঠায় আদালত। এরমধ্যে সুলতান মাহমুদ ফকিরও গ্রেপ্তার হলো। এখনও দণ্ডপ্রাপ্ত বাকি তিন আসামি পলাতক রয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালের জুন-জুলাইয়ে ত্রিশালের আহমেদাবাদে একটি বিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করে শান্তি ও রাজাকার বাহিনী। ওই সময় কাকচর গ্রামের ইউনুছ আলী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নদী পারাপার করতেন। এ কারণে ইউনুছ আলীকে ধরে ক্যাম্পে নিয়ে যান ২০ থেকে ২৫ জন। নির্যাতনের পর ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট সকালে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া ওই রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এলাকায় লুটপাট ও ধর্ষণের মতো অপরাধ করে।

২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের বিচারিক আদালতে মামলাটি করেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ইউনুছ আলীর ছেলে রুহুল আমিন। পরে ওইদিনই দুপুরে বিচারক আবেদা সুলতানা মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।

২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি এ মামলার তদন্ত শুরু হয়। একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর তদন্ত শেষ করে প্রসিকিউশনে প্রতিবেদন দাখিল করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

পরে ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতনসহ ছয়টি অপরাধের অভিযোগ গঠন করা হয়। এ ছাড়া মামলায় ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। গত বছরে ৫ ডিসেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন ট্রাইব্যুনাল। পরে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি দেয়া রায়ে ওই ছয়জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত