সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ অক্টোবর, ২০২০ ০১:২০

ধর্ষণ মামলার বাদীকে ‘দুশ্চরিত্রা’ বলে কটূক্তি নূরের

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর তার এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের সহকর্মীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে দায়ের মামলার বাদীকে ‘দুশ্চরিত্রা’ বলে কটূক্তি করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের স্নাতকোত্তরের ওই ছাত্রী আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে অনশন করছেন। এরমধ্যে গত শনিবার অসুস্থ হয়ে তিনি একবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এবং সেখানে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর ফের অনশনে বসেছেন।

রোববার রাতে মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযানের সময়ে ফেসবুক লাইভে আসেন নুরুল হক নূর। তিনি মামলার বাদী ঢাবি শিক্ষার্থীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ভিক্টিমের পরিচয় তো ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। ঢাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের না কি ছাত্রী…। তার ভাই বলেছিল, নাজমুল হাসান সোহাগ তাদের বাসায় যাওয়া-আসা করত। তাদের সাথে বিয়ের কথাবার্তাও পাকাপোক্ত হয়েছিল।

নূর দাবি করেন, নাজমুল সোহাগের সাথে যে একটা ছবি ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে আপনারা দেখেছেন, লঞ্চের কেবিনে হাসিখুশিভাবে। যে লঞ্চের কেবিনে মেয়েটি ধর্ষণের অভিযোগটি এনেছিল, সেই লঞ্চের কেবিনে। একেবারেই হাস্যরসাত্মক, ছিঃ! আমরা ধিক্কার জানাই যে, এত নাটক করছে, যেই দুশ্চরিত্রাহীন। যে ধর্ষণের নাটক করছে। স্বেচ্ছায় একজন ছেলের সাথে বিছানায় গিয়ে, লঞ্চে হাসিখুশিভাবে।

নুরুল হক নূর বলেন, ধর্ষণ করেছে জানুয়ারি মাসে। এতদিন মামলা করতে পারে নাই? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একটা লিখিত অভিযোগ দিতে পারে নাই? প্রক্টরের কাছে একটা লিখিত অভিযোগ দিতে পারে নাই? থানায় একটা মামলা করতে পারে নাই? এগুলো অনেক বিষয় আছে।

তিনি দাবি করেন, আমাদের সহযোদ্ধা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের আশ্বস্ত করতে পারি যে, ডাকসুর ভিপি নূর, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ হিল বাকি এবং নাজমুল হুদা- এই চারজনের ঘটনার সাথে কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই।

নূর বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, দুটি অভিযোগ তো প্রধান; তাকে আমি পতিতা বলে হুমকি দিয়েছি। যদি প্রমাণ করতে পারে, সেচ্ছায় ফাঁসি নেব। যদি প্রমাণ করতে পারে, তার সাথে আমার নীলক্ষেতে দেখা হয়েছিল বা মীমাংসার জন্য তার সাথে নীলক্ষেতে বসেছিলাম। এই দুটা অভিযোগের একটা যদি প্রমাণ করতে পারে, স্বেচ্ছায় ফাঁসি নেব। লাইভে এসে বললাম।

উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীর অভিযোগ, একই বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী হওয়ায় এই পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এবছরের ৩ জানুয়ারি লালবাগের বাসায় নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন মামুন। তখন সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ তার পাশে দাঁড়ান। চিকিৎসায় সহায়তা করার পর মামুনকে খুঁজে পেতে সাহায্যের কথা বলে চাঁদপুরে নিয়ে ফেরার পথে নাজমুল সোহাগও লঞ্চের মধ্যে তাকে ধর্ষণ করেন। পরে ঘটনার প্রতিকার চেয়ে তিনি নূরসহ তাদের অপর সহকর্মীদের কাছে গেলে প্রথমে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও পরে বাড়াবাড়ি করলে চরিত্রহননের ভয় দেখান।

এই অভিযোগে ওই শিক্ষার্থী পৃথক দুটি মামলা করেন। এই মামলায় রোববার রাতে রাজধানীর মগবাজার ও আজিমপুর থেকে মামলার দুই আসামি সাইফুল ইসলাম ও নাজমুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত