সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৬:০৩

ভাসানচরের পথে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দ্বিতীয় দল

কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে স্বেচ্ছায় যেতে ইচ্ছুক এমন রোহিঙ্গাদের নিয়ে দ্বিতীয় দফায় নোয়াখালীর ভাসনচরের উদ্দেশে যাত্রা করেছে ১৩টি বাস। সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দেয় এই রোহিঙ্গারা।

এর আগে তাদের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে বাসে করে নিয়ে এসে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ এর মাঠে অস্থায়ী পয়েন্ট কার্যক্রম শেষ করে সংশ্লিষ্টরা। দুপুরের পরে আরও কিছু বাস রোহিঙ্গা নিয়ে যাত্রা করার কথা রয়েছে।

এর আগে ৪ ডিসেম্বর কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে স্থানান্তরের প্রথম ধাপে বঙ্গোপসাগরের দ্বীপ ভাসানচরে পৌঁছায় ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা। আগেরদিন ভাসানচরে যেতে আগ্রহী এসব রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে গাড়িতে এনে চট্টগ্রামে শাহিন স্কুলের ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল। এবারও সেভাবে নিয়ে যাওয়া হবে তাদের।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে জানতে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা নিয়ে ১৩টি বাস দ্বিতীয় দফা ভাসানচরে যাত্রা করেছে। তবে সেখানে কতজন নারী পুরুষ রয়েছে, সেটি এখন বলা যাচ্ছে না। কিন্তু দুপুর ১ টা পর্যন্ত ১৩টি বাসে প্রায় ৬’শ মানুষ রয়েছে।

এ বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এর প্রতিনিধি এবং টেকনাফ শামলাপুর রোহিঙ্গা শিবিরের কর্মকর্তা (সিআইসি) নওশের ইবনে হালিম বলেন, তার শিবির থেকে স্বেচ্ছায় একশ রোহিঙ্গা ভাসানচরে উদ্দেশে ক্যাম্প ত্যাগ করেছে। সকালে তারা ক্যাম্প থেকে উখিয়া রওনা দিয়েছেন। এর আগের এ শিবির থেকে ২১ পরিবার ভাসানচরে পৌঁছেছিল।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার কক্সবাজার থেকে দ্বিতীয় দফা রোহিঙ্গার দলটি ভাসানচরে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) খোরশেদ আলম খান। ভাসানচর দ্বীপটি নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত। ডিসি খোরশেদ আলম খান বলেন, ‘স্বেচ্ছায় রাজি ৭’শ রোহিঙ্গা ভাসনচরে হস্তান্তরের বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’

সকালে সরেজমিনে টেকনাফ শামলাপুর রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে দেখা গেছে, সোমবার সকাল ৮ টা থেকে ক্যাম্পে বাস আসলে সিআইসি কার্যালয়ে প্রক্রিয়া শেষে সরকারি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে গাড়িতে তোলা হয়। এসময় তাদের স্বজনরা দেখতে ভিড় করে। এর আগে তাদের মধ্যে অনেকের স্বজনরাও প্রথম দফায় ভাসানচরে পৌঁছেছিল। পরে বাসে করে উখিয়া ট্রানজিট পয়েন্ট ও কলেজের অস্থায়ী ট্রানজিট ঘাটে প্রক্রিয়া শেষ করে ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দেয়। এই ক্যাম্প ১০০ জন মানুষ ভাসানচরে উদ্দেশে ক্যাম্প ত্যাগ করেন।

বিজ্ঞাপন

পরিবার নিয়ে ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রাকালে টেকনাফ শালাপুরের মো. জাহেদ হোসাইন বলেন, কেউ আমাদের জোর করেনি। নিজেদের ইচ্ছায় আমরা পুরো পরিবার ভাসানচরে চলে যাচ্ছি। তাছাড়া ভাসানচরে যারা আছে তারা অনেক ভাল আছেন বলে ফোনে জানিয়েছিল। তাই আমরা উন্নত জীবনের আশায় সেখানে যাত্রা দিচ্ছি।

টেকনাফের শামলাপুর রোহিঙ্গা শিবিরের হেড মাঝি আবুল কালাম জানান, তার শিবির থেকে ২৫ পরিবারের ১০০ জন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে উদ্দেশে উখিয়া রওনা দিয়েছে। সোমবার সেখান থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে। মঙ্গলবার তারার সকালে ভাসানচর পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত