সিলেটটুডে ডেস্ক

১২ ফেব্রুয়ারি , ২০২১ ২০:২৪

মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমিককে কেটে ৫ টুকরো!

আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি শাহনাজের

রাজধানীর ওয়ারী এলাকা থেকে সজীব হাসান নামে এক যুবকের ৫ টুকরো লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার শাহনাজ পারভীন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এর আগে সজীব হাসানকে হত্যার ঘটনায় তার খালু নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় একমাত্র আসামি করা হয় শাহনাজ পারভীনকে।

ওয়ারী থানার ওসি আজিজুর রহমান বলেন, শুক্রবার দুপুরে শাহনাজ পারভীনকে আদালতে পাঠানো হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে যা বললেন শাহনাজ : ৪৯/২ আর কে মিশন রোডে শাহনাজের বাসা। প্রায় দুই বছর ধরে কে এম দাস লেনের ১৭/১ নম্বর বাড়ির চার তলার বাসায় গিয়ে সজীবের সঙ্গে ড্রেসে পুঁথি বসানোর কাজ করতেন শাহনাজ। তার ছেলেমেয়েরা বড় হয়েছে। বড় মেয়ে কলেজে পড়ে আর দুই ছেলে চাকরি করেন। স্বামী ব্যবসা করেন। সজীবের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। কিছুদিন হলো সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সজীবের বাসায় সময় কাটাতেন তিনি। রাতের বেলা বাসায় ফিরলে পরিবারের লোকজন জিজ্ঞেস করলে তাদের বলতেন, তিনি পুঁথি বসানোর কাজ শিখছেন। কাজের প্রয়োজনে তিনি বাইরে ছিলেন। ড্রেসে পুঁথি বসানো এবং বাসায় এসে কিছু ড্রেস দিয়ে যাওয়ার সুবাদে সজীবও তার বাসায় যাতায়াত করতেন। এর মধ্যে তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে সজীবের প্রেমের সম্পর্ক হয়। বিষয়টি তিনি জানতে পেরে সজীবকে বেশ কয়েকবার সতর্কও করেন। এক পর্যায়ে সজীব মোবাইল ফোন থেকে তার মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক করার ভিডিও দেখায় তাকে। এটা দেখে তিনি লজ্জায় পড়েন। সজীবকে খুন করার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু কিভাবে করবেন তা তিনি বুঝে উঠতে পারছিলেন না।

এ অবস্থায় সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে ব্যাগে কাপড় ভরে তিনি সজীবের বাসায় ওঠেন। বুধবার রাতে একসাথে ঘুমানোর আগে সজীবকে তার মোবাইল ফোন থেকে মেয়ের ভিডিও ফুটেজ ডিলিট করে দিতে বলেন। তখন সজীব তাকে জানায় যে যদি তার মেয়েকে ওই বাসায় আনতে পারে তবেই ভিডিও ডিলিট করা হবে। তখন সজীব তার মোবাইল ফোন থেকে তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক করার একটি ভিডিও ফুটেজ দেখায়। সেটা দেখিয়ে সজীব তার স্বামীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা এনে দিতে বলে। এসব বিষয় নিয়ে আলাপ করার এক পর্যায়ে সজীব ঘুমিয়ে পড়ে। তখন তিনি রান্নাঘর থেকে বটি এনে ঘুমন্ত সজিবকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওয়ারী থানার এস আই সাইফুল ইসলাম জানান, আসামি শাহানাজ পারভিন দোষ স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় মেজিষ্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন আদালত।

তিনি বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে আসামির সঙ্গে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা পয়সার জব্দ তালিকায় দেখানো হয়েছে কি-না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, জব্দ তালিকায় অবশ্যই দেখানো হয়েছে। তবে যা কিছু হচ্ছে, তা আইন মেনে করা হচ্ছে। তবে তদন্তের স্বার্থে সব কিছু বলা যাচ্ছে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত