সিলেটটুডে ডেস্ক

০৮ নভেম্বর, ২০১৫ ১৪:২৮

‘খুনিদের সঙ্গে’ সংলাপে বসার কোনো ইচ্ছা নাই : প্রধানমন্ত্রী

বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়া জাতীয় সংলাপের আহ্বান নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খুনিদের সঙ্গে’ সংলাপে বসার কোনো ইচ্ছা তার নেই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে দেশে এমন কোনো রাজনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয় নাই সংলাপে বসতে হবে।

নেদাররল্যান্ডস সফর নিয়ে রোববার (৮ নভেম্বর) গণভবনে এক সংবাদ সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নেদারল্যান্ডস সফরের বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, নেদারল্যান্ডসের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশে ডেল্টা ফান্ড গঠন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এতো দৈন্য দশায় বাংলাদেশ পড়েনি যাতে যারা মানুষ পুড়িয়ে মারে তাদের সঙ্গে সংলাপে বসতে হবে।”

দেড় মাসের বেশি সময়ে ধরে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপিনেত্রী বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেন, “সরকার শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে দেশের এই ক্রান্তিকাল ও সঙ্কটজনক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে গণতন্ত্র বিকাশের ক্ষেত্রকে সংকোচন না করে কর্তৃত্ববাদী মনোভাব থেকে সরে এসে একটি জাতীয় সংলাপের সূচনার পরিবেশকে উন্মুক্ত করবে।”

জাতীয় সংলাপ হলেই বাংলাদেশের বতর্মান সংকট কেটে যাবে খালেদা জিয়ার এই মন্তব্যের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এই আহবানই প্রমাণ করে দেশের সব খুনের সাথে তার যোগসূত্র আছে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে বিএনপি চেয়ারপারসনকে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে ফোন করার কথা মনে করিয়ে দেন।

তিনি বলেন, “আপনার জানেন, নির্বাচনের আগে আমি তাকে ফোন করি। তখন কী ধরনের কথা শুনতে হয়েছে। ফোন করে আমার ঝাড়ি খেতে হয়েছে।”

খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর সমবেদনা জানাতে খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়ে গিয়েও ঢুকতে না পারার কথাও মনে করিয়ে দেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “আপনি যদি কারও বাড়িতে যান, আর আপনার মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আপনি কি তার সঙ্গে আলোচনায় বসবেন?”

সংলাপের কথা বলার আগে খালেদা জিয়াকে “মানুষ পোড়ানোর রাস্তা’ থেকে বেরিয়ে আসার এবং জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হাসিনা।

“উনি বলুক- যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে সমর্থন করেন। উনি বলুক- যুদ্ধাপরাধের যে বিচার হচ্ছে, তা সঠিক হচ্ছে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “যার হাতে মানুষ পোড়ে, তার সাথে সংলাপের ইচ্ছা আমার নাই।… দয়া করে আমাকে ওই খুনি মানুষের সাথে বসতে অনুরোধ করবেন না। কারণ বসলেই পোড়া গন্ধ পাব।”

সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া হত্যা ও হামলার জন্যও যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানকে দায়ী করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন,“আগুন দিয়ে মানুষকে হত্যার পরও যেখানে দেখা যাচ্ছে যে তারা কিছু করতে পারছে না, তাই একটি গ্রুপ নেমেছে গুপ্ত হত্যায়।”

দেশের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে কোনোভাবে অনিরাপদ করতে পারলেই এখানে হামলা চালানো যায়। কিন্তু সেটা বাংলাদেশে হবে না। আমরা জঙ্গিবাদকে শিকড় উপরে ফেলবো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিউইয়র্কে আওয়ামীগ নেতাকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ফ্লোরিডায় মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। কেন এই প্রবাসীকে সেখানে হত্যা করা হলো, সে প্রশ্ন কি আমেরিকান প্রেসিডেন্ট কেউ করতে পারবেন?

তিনি বলেন, এখন সাম্প্রতিক বিদেশি হত্যা নিয়ে কেউ বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে যদি প্রশ্ন তোলে, তবে, এ দেশে আইএস আছে বলে প্রমাণ করতে যারা চক্রান্ত করছে তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে কথা বলা হবে। বাংলাদেশের কেউ কি এটি প্রমাণ করতে চান? বাংলাদেশ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ দেশ, কোনোভাবেই অনিরাপদ নয়।

নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশ সরকারের সাফল্যের প্রশংসা করেন বলে জানান তিনি। বলেন, নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আন্তরিক ও উষ্ণ এবং এ সম্পর্ক আরও গভীর, জোরদার ও বিস্তৃত হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত