সিলেটটুডে ডেস্ক

২৭ এপ্রিল, ২০২১ ২২:৩১

মেয়েটির গলায় ফাঁসের দাগ

রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা তরুণীর মরদেহে গলায় ফাঁসের দাগ পাওয়া গেছে। তবে শরীরের আর কোথাও আঘাতের চিহ্ন পায়নি পুলিশ।

গুলশান থানার উপপরিদর্শক শামীম হোসেন, এএসআই আব্দুল রশিদ, গোলাম মোস্তফা, জান্নাতুল ফেরদৌসসহ নুসরাত জাহান ও ফারহানা সুলতানার সহায়তায় মেয়েটির মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামানো হয়।

সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, জিহ্বা মুখ থেকে বাইরে ছিল। গলার বাম পাশে অর্ধচন্দ্রাকৃতি গভীর কালো দাগ দেখা যায়। হাত দুটি শরীরের সঙ্গে লম্বালম্বি অর্ধমুষ্টি ছিল।

সোমবার সন্ধ্যার দিকে গুলশান ২ নম্বরের ১২০ নম্বর সড়কের ফ্ল্যাট থেকে ওই তরুণীর ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর তার বোনের মামলায় তোলপাড় পড়ে যায়।

মামলায় দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক গোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে করা হয় আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা।

মেয়েটির বোন জামাই জানান, ২০১৯ সালের শেষের দিকে আনভীরের সঙ্গে ফেসবুকে তার শ্যালিকার পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়।

তবে ২০২০ সালের মার্চে মেয়েটি কুমিল্লায় চলে যায়। আর গত বছরের জুন-জুলাইয়ে পরীক্ষা থাকায় তাকে আবার ঢাকায় পাঠানো হয়। এরপর আবার আনভীরের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। আর তারা বাসা ভাড়া নেন।

পুলিশের গুলশান জোনের উপকমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, ২৩ এপ্রিল একটি ইফতার পার্টি হয় ওই বাসায়। সে পার্টির ছবি ফেসবুকে আপলোড করা হলে মেয়েটির সঙ্গে ওই এমডির মনোমালিন্য হয়। পরে মেয়েটি তার বোনকে ফোন করে জানান, যে কোনো মুহূর্তে তার যে কোনো ঘটনা ঘটতে পারে।

এই ফোনের পর কুমিল্লা থেকে সোমবার বিকেলে ঢাকায় আসেন ওই তরুণীর বোন। তবে গুলশানের ফ্ল্যাটটির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পান তিনি।

গুরুত্ব বিবেচেনায় গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলার তদন্ত করছেন জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজ বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আসবে।

ভগ্নিপতি জানান, মেয়েটির তার বোনের সঙ্গে রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে কথা বলেছে স্বাভাবিক ভাবেই। তবে আগের রাতে ভয় পাওয়ার কথা বলেছে।

মেয়েটি ছাত্রী হিসেবে খুব ভালো ছিল জানিয়ে তার ভগ্নিপতি বলেন, ‘সে সুন্দর আর্ট করতে পারত, অসাধারণ ছবি আঁকতে পারত। তার হাতের লেখা সুন্দর হওয়ার কারণে তার ইচ্ছা ছিল কোরআন হাতে লিখবে। এইসএসসি পাস করে তার ইচ্ছা ছিল আর্কিটেক্ট হবে।’

ময়নাতদন্তের পর মরদেহ মেয়েটির গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাবা মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয় তাকে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত