নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:৫৩

ওসমানীনগরে এটিএম বুথের টাকা লুটের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

সিলেটের ওসমানীনগরে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের একটি এটিএম বুথ ভেঙে টাকা লুটের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা হতে তাদের গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মো. শামীম আহাম্মেদ, নূর মোহাম্মদ সেবুল ও মো আব্দুল হালিম। এ সময় তাদের হেফাজত থাকা প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার, আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ড, ট্যাক্স সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরণের জাল নিয়োগপত্র উদ্ধার করা হয়। এছাড়া তাদের কাছা থেকে লুণ্ঠিত হওয়া ২৪ লক্ষাধিক টাকার মধ্যে ১০ লক্ষ ৮ হাজার টাকা, ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত ২ টি মোবাইল ফোন, ১ টি ছুরি, ১ টি  প্লাস ও মাথায় ব্যবহৃত ৩ টি কাপড়ের টুকরা জব্দ করা হয়।

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

পুলিশ কমিশনার বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে কতিপয় দুষ্কৃতিকারী ওসমানী নগর থানার শেরপুর নতুন বাজার হাজী ইউনুস উল্ল্যাহ মার্কেটের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের নিচ তলায় স্থাপিত এটিএম বুথের দায়িত্বরত পাহারাদারকে মারপিট করে হাত ও মুখ স্কচটেপ পেঁচিয়ে বেঁধে ফেলে। এরপর দুষ্কৃতিকারীরা এটিএম বুথে স্থাপিত এটিএম মেশিনের সম্মুখ দরজা ও লক ভেঙ্গে নগদ ২৪ লক্ষ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে যায়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ১২ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলার ওসমানী নগর থানায় একটি মামলা রুজু হয়। উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পর্কে পারদর্শী। এটিএম বুথের এটিএম মেশিন ভেঙ্গে টাকা লুটের মূল পরিকল্পনাকারী মো. শামীম আহাম্মেদ নিয়মিত ভারতীয় মেগা সিরিয়াল সিআইডি অনুষ্ঠানটি দেখতেন। উক্ত সিরিয়াল দেখে এটিএম বুথের এটিএম মেশিন ভাঙ্গার কলা কৌশল রপ্ত করেন এবং টাকা লুটের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরিকল্পনা মোতাবেক তার সহযোগী গ্রেপ্তারকৃত নূর মোহাম্মদ সেবুল ও মো. আব্দুল হালিমদের সাথে আলোচনা করে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তারা মুখে মাস্ক, মাথায় গোলাপি রঙয়ের কাপড় বেঁধে ও মাথায় ক্যাপ পরিধান করে এবং শাবল ও অন্যান্য যন্ত্রপাতিসহ ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের শেরপুর শাখার এটিএম বুথে প্রবেশ করে। এটিএম বুথের সিসিটিভি ক্যামেরায় তাদের চেহারা যেন না দেখা যায় সেজন্য কালো রংয়ের স্প্রে করে ক্যামেরার লেন্স ঝাপসা করে দেয়। এ সময় তারা এটিএম বুথের সিকিউরিটি গার্ডকে মারধর করে ও হাত ও মুখ স্কচটেপ দিয়ে বাঁধে। পরবর্তীতে তারা শাবল দিয়ে এটিএমে বুথের লক ও বক্স ভেঙ্গে ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে যায়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে অন্যান্য থানায় মামলার তথ্য পাওয়া যায়।

গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জুনায়েদ আলম সরকারের তত্ত্বাবধানে সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম, পিপিএম এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১২ সেপ্টেম্বর রাত ৪টার দিকে ডাকাত দলের সদস্যরা নিরাপত্তারক্ষীকে বেঁধে লুটের ঘটনা ঘটায়। সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার শেরপুর নতুন বাজারস্থ ইউনুছ ম্যানশনের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় নিরাপত্তারক্ষীকে বেঁধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ছিনতাইকারীরা ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৪০০ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত