সিলেটটুডে ডেস্ক:

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২০:৫২

ট্রেনে ডাকাতি ও জোড়া খুন: গ্রেপ্তার ৫

ট্রেনে ডাকাতির ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ডাকাতি ও জোড়া খুনের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

রোববার র‌্যাব-১৪ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

র‌্যাব জানায়, চক্রটির মূল পেশা ট্রেনে ডাকাতি ও ছিনতাই। রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে ময়মনসিংহ জংশনের মধ্যে তারা ডাকাতি করত। এই চক্রই গত শনিবার রাতে কমিউটার ট্রেনে ডাকাতি ও জোড়া খুন করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- আশরাফুল ইসলাম স্বাধীনকে (২৬), মাকসুদুল হক রিশাদ (২৮), মো. হাসান (২২), রুবেল মিয়া (৩১) ও মোহাম্মদ (২৫)।

সংবাদ সম্মেলনে উইং কমান্ডার মো. রোকনুজ্জামান জানান, গফরগাঁওয়ে ট্রেনে ডাকাতি ও হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে ঘটনাটি তদন্ত শুরু করে র‌্যাব। গত শনিবার রাতে র‌্যাবের একটি দল সন্দেহভাজন হিসেবে নগরীর শিকারিকান্দা এলাকা থেকে আশরাফুল ইসলাম স্বাধীনকে হেফাজতে নেয়। ওই সময় তার কাছ থেকে লুট হওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পরে স্বাধীনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতি ও হত্যায় জড়িত আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলো মাকসুদুল হক রিশাদ, মো. হাসান, রুবেল মিয়া ও মোহাম্মদ। তাদের মধ্যে তিনজন নগরীর বাঘমারা ও একজন ধামাই এলাকার বাসিন্দা। তাদের কাছ থেকেও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের দেখানো স্থান থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশি অস্ত্র উদ্ধার করে র‌্যাব।

গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ ব্যক্তিকে প্রাথমিক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব জানতে পারে ট্রেনে ডাকাতির উদ্দেশে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চারজন পেশাদার ডাকাত দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনে উঠে। রিশাদ, হাসান এবং স্বাধীন গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন থেকে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়। ট্রেনটি ত্রিশালের ফাতেমা নগর স্টেশনে থামলে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় মোহাম্মদ ও তার একজন সহযোগী। ট্রেন স্টেশন ছেড়ে চলতে শুরু করলে ডাকাত দলটি ইঞ্জিনের পরের বগির ছাদে বসে থাকা যাত্রীদের মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন লুট করা শুরু করে। ডাকাতির এক পর্যায়ে যাত্রী সাগর মিয়া ও নাহিদ বাধা দিলে তাদের অস্ত্র দিয়ে এলোপাতারীভাবে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করে। পরে সাগর ও নাহিদ মারা যান। দলটি তাদের কাজ শেষে করে ট্রেনটি ময়মনসিংহ রেলস্টেশনে প্রবেশের আগে সিগন্যালে ট্রেনের গতি কমলে নেমে যায়।

আসামিদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব আরও জানতে পারে- একটি সংঘবদ্ধ চক্র নিয়মিতভাবে ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছে। চক্রটি ঢাকার কমলাপুর, এয়ারপোর্ট ও টঙ্গী রেলস্টেশন থেকে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ট্রেনে উঠত। চক্রটির কিছু সহযোগী গফরগাঁও ও ত্রিশালের ফাতেমা নগর স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে সম্মিলিতভাবে ডাকাতি ও ছিনতাই করে ময়মনসিংহ স্টেশনে নেমে যেত। গত বৃহস্পতিবার চক্রটি ছিনতাইয়ের পরিবর্তে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। দলটি ছোট ছোট উপ-গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ডাকাতি ও ছিনতাই করত।

র‌্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তার রিশাদ, স্বাধীন, মোহাম্মদসহ কয়েকজন সরাসরি ডাকাতির কাজে সম্পৃক্ত ছিল। হাসান টার্গেট শনাক্তের কাজে যুক্ত ছিল। আর রুবল লুণ্ঠিত মোবাইল ও অন্যান্য লুন্ঠিত মালপত্র স্বল্পমূল্যে এই চক্রের কাছ থেকে সংগ্রহ করত এবং অন্যদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করত। সে এই চক্রের পৃষ্ঠপোষক বলে জানা যায়। এর মধ্যে রিশাদ সংঘবদ্ধ চক্রের মূল হোতা। তার নামে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানা ও কোতোয়ালি থানায় মামলাও রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত