তালেবানরা ক্ষমতায় এলে মন্ত্রী হবেন- এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন মুফতি কাজী ইব্রাহীম। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। তিনি এরও জানান আধ্যাত্মিক জগতে রয়েছে তার অবাধ বিচরণ, স্বপ্নে তিনি অনেক তথ্য পান।

বাংলাদেশে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর অনেক দালাল বা এজেন্ট রয়েছে- মর্মে যে বক্তব্য মুফতি কাজী ইব্রাহীম প্রচার করেছেন, সেটিও তিনি জেনেছেন স্বপ্নে পাওয়া এক নোটিশে। তবে সত্যতা যাচাই না করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি প্রচার করা উচিত হয়নি বলেও গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন মুফতি ইব্রাহিম।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ডিএমপির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তরের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাজী ইব্রাহিমকে হেফাজতে নেওয়া হয়। তখন তিনি সব উদ্ভট ও বিভ্রান্তিকর কিছু তথ্য দিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন সময় যা যা বলেছেন, সবই নাকি স্বপ্নে দেখেছেন। তার রয়েছে ধর্মীয় বিষয়ে অগাধ পাণ্ডিত্য। কিন্তু তিনি হরহামেশা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়েই বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। যদিও তার এসব বিষয়ে কোনও গভীরতা নেই।

তালেবানরা ক্ষমতায় এলে মন্ত্রী হবেন- কাজী ইব্রাহীমের এমন স্বপ্ন সম্পর্কে হারুন অর রশীদ বলেন, তিনি বলেছেন তিনি নাকি স্বপ্নে দেখেছেন তালেবানরা ক্ষমতায় আসবে। সেটি নাকি সত্যিও হয়েছে। তিনি মন্ত্রিত্বও পাবেন। এমন সব তথ্য তিনি পেয়েছেন স্বপ্নযোগে।

তিনি বিভিন্ন উদ্ভট, বিভ্রান্তিকর তথ্য তিনি ছড়িয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে। মসজিদের খুতবায়, বিভিন্ন মাহফিলেও এসব বলে তিনি মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ভোরে মোহাম্মদপুর লালমাটিয়া জাকির হোসেন রোডের বাসা থেকে মুফতি ইব্রাহীমকে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে দুটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন জেড এম রানা নামের এক ব্যক্তি। সামাজিক মাধ্যমে ‘উগ্র’ বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটি করে গোয়েন্দা পুলিশ।

গোয়েন্দা পুলিশের মামলায় ২৯ সেপ্টেম্বর কাজী ইব্রাহীমের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর আদালত। পরে এ ধর্মীয় বক্তাকে রিমান্ড শেষে আদালতে সোপর্দ করা হলে গত শনিবার ঢাকার মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।