সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ অক্টোবর, ২০২১ ১৬:৩৪

বিসিএসের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ড. জয়দেব, হঠাৎ কেন আত্মহত্যা?

সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ থেকে সদ্য পাস করা জয়দেব কুমার দাস ঢাকা এসে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। শনিবার রাতে অর্ধগলিত অবস্থায় তার মরদেহ খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ-২ এর একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়।

জয়দেবের বাম হাতে একটি সিরিঞ্জ লাগানো ছিল। যাতে তরল জাতীয় পদার্থ পাওয়া গেছে। সঙ্গে একটি নোটও পেয়েছে পুলিশ।

যেখানে জয়দেব লিখেছেন, ‘জীবন ও মৃত্যু সমান, বেঁচে থাকার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আমার এ মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’।

তবে চিরকুটটি জয়দেবের নিজের লেখা কি না তা যাচাই করা হচ্ছে।

খিলক্ষেত থানা পুলিশ প্রাথমিকভাবে মনে করছে, জয়দেব আত্মহত্যা করেছেন। তবে সিরিঞ্জে পাওয়া তরলের পরীক্ষা, নোটের হাতের লেখার যাচাই এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসার কথা জানিয়েছে বাহিনীটি।

জয়দেব কবে মারা গেছেন, সেটি নিশ্চিত নয়। নিকুঞ্জ-২ এর ১৫ নম্বর সড়কের ৮ নম্বর বাড়ির ৮ তলার দক্ষিণের পাশের ফ্ল্যাটের একটি কক্ষ থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হয়।

কক্ষটি কয়েকদিন ধরে বন্ধ ছিল- এমন খবর পেয়ে শনিবার রাত ৯টার দিকে ওই বাড়িতে যায় পুলিশ। কক্ষের দরজা ভেঙে পশ্চিম পাশের বিছানায় জয়দেবকে চিৎ অবস্থায় মৃত পাওয়া যায়।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আলামত উদ্ধার করে। সুরতহাল ও অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে রাত ২টার দিকে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

রোববার দুপুরে ময়নাতদন্ত করা হয়।

নিকুঞ্জ-২ এর বাড়িটির দারোয়ানের বরাতে মরদেহ উদ্ধারের পর খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুন্সি সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘জয়দেব গত তিন দিন বাসা থেকে বের হতে দেখেননি। ওই কক্ষে তিনি একাই থাকতেন।’

খবর পেয়েই নিকুঞ্জ-২ এলাকার ওই বাসায় হাজির হয়েছিলেন খিলক্ষেত থানার উপ পরিদর্শক রাসেল পারভেজ। তিনি বলেন, ‘উনার বাম হাতে লাগানো একটি সিরিঞ্জ পেয়েছি। যাতে তরল জাতীয় পদার্থ ছিল। সিরিঞ্জের ভেতরে কী রয়েছে তা সিআইডির ল্যাবে পরীক্ষার পর জানা যাবে। একটি নোট খাতা ও লাল কলম পেয়েছি।

‘এছাড়া তার কক্ষ থেকে তিনটি সিরিঞ্জে তরল পদার্থ পাওয়া গেছে ও পাঁচটি কেসিএল ইনজেকশনের খালি প্যাকেট পাওয়া গেছে।’

জয়দেবের গ্রামের বাড়ি বাড়ি দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরের দক্ষিণ সালান্দার কুমারপাড়া গ্রামে। মৃত্যুর খবর পেয়ে তার ভাই নয়ন চন্দ্র দাস ঢাকা মেডিক্যালে আসেন।

তিনি বলেন, ‘ঢাকায় ও বিসিএসের পড়াশুনা করছিল। কেন, কীভাবে হলো জানি না। আমি ক্লান্ত।’

জয়দেব মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে জানান খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুন্সি সাব্বির আহমেদ। তিনি বলেন, ‘মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর জানা যাবে। পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত