সিলেটটুডে ডেস্ক:

১১ মে, ২০২২ ২২:৫৩

১৫ জেলায় লুকিয়ে রাখা ২ লাখ লিটার তেল উদ্ধার

রোজার পর দাম বাড়বে- এমন আভাস পেয়ে ভোক্তার কাছে বিক্রি না করে লুকিয়ে রাখা তেলের মধ্যে আরও প্রায় ২ লাখ লিটারের সন্ধান মিলেছে কেবল ১৫ জেলায়।

চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে জেলায় জেলায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ধারাবাহিক অভিযান চলছে। এর মধ্যে বুধবার যেসব জেলায় অভিযান চালানো হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ২৪ হাজার ১৩৭ লিটার তেল জব্দ করা হয় কেবল পাবনাতেই। জেলার সুজানগর, বেড়া ও সাঁথিয়ার বিভিন্ন গুদামে অভিযান চালিয়ে এই তেল উদ্ধার করা হয়।

জেলার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বুধবার সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই অভিযান চালায়।

আগের দিনও সাত জেলায় ১ লাখ ৬৫ হাজার লিটার তেল খুঁজে পায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

তেলের দাম বাড়তে পারে- এমন আভাস পেয়ে ঈদের আগে তেল বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। ঈদের পর বোতলজাত তেলের লিটার ৩৮ টাকা আর খোলা তেল ৪৪ টাকা বাড়ানোর পরও বাজারে সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। পরে অভিযানে নামে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বেরিয়ে আসে বেশি দামে বিক্রির জন্য তেল লুকিয়ে রাখার প্রমাণ।

অধিদপ্তরের পাবনা শাখার সহকারী পরিচালক জহিরুল ইসলাম জানান, বুধবার সকালে সুজানগর উপজেলার পৌর শহরে সিনেমা হলের কাছে ঘোষ স্টোর থেকে পাওয়া যায় ১ হাজার ৪৩৫ লিটার খোলা সয়াবিন তেল ও ১ হাজার ৭০২ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল। গেল ঈদের আগে সেগুলো অবৈধভাবে মজুত করা হয়েছিল। এ ঘটনায় দোকানমালিক দুলাল ঘোষকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, সন্ধ্যায় বেড়ার কাশীনাথপুর এলাকায় ব্যবসায়ী সুনীল কুমার ও মীর মো. আবুল খায়েরের গুদামে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দল। এ সময় দুই গুদামে পাওয়া যায় ৩০ হাজার লিটার করে ৬০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল। ব্যবসায়ী সুনীল কুমারকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও আবুল খায়েরকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এ ছাড়া কাশিনাথপুরের লক্ষ্মণ কুমার সাহার গুদামে পাওয়া গেছে ১৫ হাজার লিটার তেল। গুদামমালিককে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

আর সবশেষ রাতে পাবনা শহরের দিলালপুর এলাকায় উত্তম কুন্ডুর গোডাউন থেকে ৪৬ হাজার লিটার ভোজ্যতেল জব্দ করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবুল হাসনাত।

সব মিলিয়ে ১৫ জেলায় পাওয়া গেছে মোট ১ লাখ ৯৪ হাজার ৪৮১ লিটার তেল।

দুপুরে ঝালকাঠি শহরের এক ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে জব্দ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৭৪৬ লিটার সয়াবিন তেল। শহরের আড়তদারপট্টি এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই তেল জব্দ করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঝালকাঠির সহকারী পরিচালক ইন্দ্রানী দাস।

তিনি জানান, অবৈধভাবে তেল মজুতের দায়ে ব্যবসায়ী বিকাশ কুণ্ডুকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

গাজীপুরের টঙ্গী বাজারে বিকেলে অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয়েছে ১২ হাজার ৬৪৮ লিটার খোলা সয়াবিন তেল ও পাম তেল।

নীলফামারীর ডিমলা ও বগুড়ার কাহালুতে ৭ হাজার লিটার করে ১৪ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়েছে।

৫ হাজার লিটার করে ভোজ্যতেল মজুত করে জরিমানা গুনেছেন শেরপু‌রের না‌লিতাবাড়ী‌ ও বাগেরহাট সদরের পাঁচ ব্যবসায়ী।

চট্টগ্রামের কর্নেলহাটের একটি দোকানে ৪ হাজার লিটার খোলা তেল ও আরেকটিতে ১৩০ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া গেছে। দুই দোকানকে মোট ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

দুপুরে সিলেট নগরের কাজিটুলা এলাকার একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে পাওয়া গেছে সাড়ে ৪ হাজার লিটার সয়াবিন তেল।

৩ হাজার ৭০০ লিটার তেল মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার দায়ে নেত্রকোণার কলমাকান্দার এক ব্যবসায়ীকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

দুপুরে শরীয়তপুরের পালং বাজারে অভিযান চালিয়ে দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মজুত করা ২ হাজার ২৫৮ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল জব্দ করে অধিদপ্তর।

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি ও চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় জব্দ করা হয়েছে ২ হাজার লিটার করে তেল।

ফরিদপুরে শহরের দুই দোকানে অভিযানে ৭১২ লিটার তেল পেয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

সাতক্ষীরা সদরের সাকার মোড়ের একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ও সুলতানপুর বড়বাজারে অভিযান চালিয়ে পাওয়া গেছে ৭৫০ লিটার সয়াবিন তেল।

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ঝিটকা বাজারে অভিযান চালিয়ে পাওয়া যায় প্রায় ৪০০ লিটার তেল।

খবর নিউজ বাংলার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত