সিলেটটুডে ডেস্ক

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৯:৩০

মরিয়ম মান্নানকে গ্রেপ্তারের দাবি


খুলনার মহেশ্বরপাশা থেকে রহিমা বেগমের নিখোঁজের মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তাদের স্বজনরা। একই সঙ্গে মিথ্যা মামলায় ওই ব্যক্তিদের ফাঁসানোর অভিযোগ তুলে রহিমার মেয়ে মরিয়ম মান্নানকে গ্রেপ্তারের দাবিও তারা জানিয়েছেন।

রহিমার আরেক মেয়ে আদুরী আক্তারের করা ওই মামলায় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী ও তাদের ৫ জন প্রতিবেশী গ্রেপ্তার আছেন।

তাদেরকে জমির বিরোধের জেরে অপহরণের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন স্বজনরা।

খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর মিলনায়তনে মঙ্গলবার দুপুরে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

ওই মামলায় গ্রেপ্তার মো. মহিউদ্দীনের মেয়ে মালিহা মহিউদ্দিন বলেন, ‘রহিমা বেগম ও তার সন্তানরা এলাকায় ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করেছেন। ওই পরিবার মামলাবাজ পরিবার হিসেবে এলাকায় পরিচিত। প্রতিবেশীদের ঘায়েল করার জন্য অপহরণের মামলা করা হয়েছিল।

‘একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে তারা প্রতিবেশীদের শায়েস্তা করছেন। কয়েক বছর আগে ৮ থেকে ৯ বছরের এক শিশুর বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার মামলাও করেছিলেন রহিমা বেগম। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় তারা প্রতিবেশীদের মামলার ভয় দেখান।’

সংবাদ সম্মেলনে দেয়া লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, মরিয়মের বাবা মান্নান তিনটি বিয়ে করেছিলেন। এর মধ্যে মান্নানের প্রথম পক্ষের ছেলে মিজানুর রহমানের কাছ থেকে হেলাল শরীফ ও গোলাম কিবরিয়া জমি কিনেছিলেন। কিন্তু রহিমা বেগম ও তার পরিবারের লোকজন সেই জমির দখল নিতে দেননি। উল্টো এ ঘটনায় মানহানির মামলা করেছিলেন রহিমা। সেই মামলায় হেলাল শরীফসহ পাঁচজন আসামি ছিলেন। তারা সবাই আগাম জামিন নেন। এ কারণে আবার নতুন করে তাদের ফাঁসাতে রহিমার অপহরণের গল্প সাজানো হয়।

মালিহা মহিউদ্দিন বলেন, ‘রহিমা বেগমের কাছ থেকে ব্যাগ, কাপড়চোপড়, ওষুধ, প্রসাধনী উদ্ধার করা হয়। তিনি ফরিদপুরে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মনিবন্ধন সনদ নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এটা কোনোভাবে অপহৃত ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। পত্র-পত্রিকা থেকে জানা যায়, রহিমা বেগমের কাছে কোনো মুঠোফোন ছিল না। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে খুলনা না এসে ফরিদপুর গেছেন তিনি।

‘রহিমা বেগমের ছেলে মিরাজকে ফরিদপুর থেকে মুঠোফোনে তার মায়ের বিষয়ে জানানো হলেও মিরাজের স্ত্রী এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। তারা বিষয়টি প্রশাসনকেও জানাননি। এসব দেখে স্পষ্টই বোঝা যায়, পুরোটা একটা নাটক। আর এই নাটক সাজানোর মূল কারণ আমাদের বিপাকে ফেলা।’

ফরিদপুরে বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন তাকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি অপহরণের শিকার বলে দাবি করেন। পরে মেয়ে আদুরী আক্তারের জিম্মায় তাকে মুক্তি দেয় আদালত।

এর আগে ২৭ আগস্ট রাতে দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়ার বাড়ি থেকে রহিমা নিখোঁজ হন বলে অভিযোগ করেন তার মেয়ে মরিয়ম ও তার ভাই-বোনেরা। পরদিন দৌলতপুর থানায় মামলা করেন রহিমার মেয়ে আদুরী। আসামি করা হয় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে। সেই মামলায় প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিকুল ইসলাম পলাশ, মোহাম্মদ জুয়েল, হেলাল শরীফ ও রহিমা বেগমের দ্বিতীয় স্বামী বেল্লাল হাওলাদার কারাগারে রয়েছেন।

খুলনা পিবিআই পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘রহিমা বেগম আদালতে অপহরণের জবানবন্দি দিয়েছেন। আমরা সেই কপি নিয়ে তার কথার সত্যতা যাচাই করব। এছাড়া যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা কারাগারে আছেন। ইতোপূর্বে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। এখনও শুনানি হয়নি। মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। তদন্তে সব রহস্য উদঘাটন হবে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত