সিলেটটুডে ডেস্ক

৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৬:৪৪

শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের নামে মেয়রকে ‘আপত্তিকর’ চিঠি

ব্যাখ্যা চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের দপ্তরে একটি ‘আপত্তিকর’ চিঠি এসেছে। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নামে আসা সেই চিঠি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় হয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় চিঠির বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে ২২ সেপ্টেম্বর রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে নোটিশ দিয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, এটি একটি উড়োচিঠি। বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য কেউ এই চিঠি ছেড়েছে। এই চিঠি নিয়ে শিক্ষা বোর্ড বিব্রত।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘আপনার সঙ্গে আমাকে দেখা করার জন্য গেটে অপেক্ষা করতে হবে! আপনার কাছে সময় চাইতে হবে? বিষয়টি কল্পনা করা আমার জন্য দুরূহ। আপনি জানেন কী আমার জা শাশুড়ি এমপি। আমার আওয়ামী পরিবারে জন্ম। ভবিষ্যতে আমিও এমপি বা মন্ত্রী হতে পারি। গাজীপুরের ও কাটাখালীর মেয়রের দিকে তাকান। বর্তমানে তাঁদের কী অবস্থা?’

সিটি করপোরেশন ও শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই ওই চিঠিটি মেয়রের দপ্তরে পৌঁছায়। এরপর সিটি করপোরেশন থেকে চিঠিটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম গত ২৪ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠান। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলাবিষয়ক শাখার উপসচিব মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ ২২ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে এ বিষয়ে ১০ দিনের মধ্যে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের কাছে ব্যাখ্যা চান।

শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান এর মধ্যে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। এর আগে চিঠির বিষয়টি জানতে পেরে ২৬ জুলাই মেয়র খায়রুজ্জামানকেও ব্যাখ্যা দিয়েছেন বোর্ড চেয়ারম্যান।

শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে পাঠানো ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের অনুরূপ (জাল/ স্ক্যান) স্বাক্ষরে একটি আপত্তিকর পত্র রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়রের কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের কোনো স্বারক নম্বর ব্যবহার করা হয়নি। চিঠিটি উপশহর পোস্ট অফিস থেকে পোস্ট করা হয়েছে, যা মেয়রের দপ্তর থেকে বোর্ড চেয়ারম্যান জেনেছেন। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সব দাপ্তরিক চিঠি বোর্ড–সংলগ্ন জিপিও-৬০০০ থেকে পোস্ট করা হয়। চিঠিতে যে ধরনের প্যাড ও ফরমেট ব্যবহার করা হয়েছে, তা রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের কোনো দাপ্তরিক পত্রে ব্যবহার করা হয় না। মেয়রের কাছে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান সম্পর্কে বিভ্রান্তি তৈরির জন্য কে বা কারা এই স্মারকবিহীন পত্রটি উপশহর ডাকঘরে পোস্ট করেছে। বিষয়টি নিয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড বিব্রত এবং তা তদন্তের দাবি রাখে। ওই চিঠির সঙ্গে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

শুক্রবার দুপুরে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, এটা একটা উড়োচিঠি। একজন সরকারি কর্মকর্তা কখনো মেয়রকে উদ্দেশ্য করে এমন চিঠি দিতে পারেন না। তিনি বলেন, চিঠিটা ‘টাইপ’ করা। অথচ তার দপ্তর থেকে সব চিঠিই কম্পিউটার কম্পোজ করে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘জা শাশুড়ি’ বলে একটি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। তার অঞ্চলের মানুষ এই শব্দ ব্যবহার করে না। যে অঞ্চলের মানুষ এই শব্দ ব্যবহারে অভ্যস্ত তারাই এই চিঠি লিখেছে।

হাবিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি অবগত হওয়ার পরই মেয়রের সঙ্গে কথা বলে তিনি বিষয়টি পরিষ্কার করে নিয়েছেন। চিঠিও দিয়েছেন। এ চিঠি তিনি লিখেননি।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে মেয়র খায়রুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনিও ফোন ধরেননি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত