সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ মে, ২০২৩ ১৮:১১

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতিকে বিএনপির স্বাগত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির প্রধান আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত ভোট রিগিং হচ্ছে, ভোটের দিন ছাড়াও প্রতিদিন ভোট রিগিং হয় বাংলাদেশে। এটা বন্ধ করার জন্য আমরা তাদের পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল গুলশানে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের বাসায় একটি বৈঠকে যোগ দেন। সেখানে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

কেন স্বাগত জানাচ্ছেন তার কারণ ব্যাখ্যা করে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত এসেছে। আমরা এটাকে (যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি) ওয়েলকাম করছি এই কারণে যে নির্বাচন নিয়ে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের মানুষের যে শঙ্কা, অন্তত এই ধরনের একটি পদক্ষেপ আমি মনে করি আগামী দিনে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

আমির খসরু বলেন, এটা তাদের জন্য বড় মেসেজ। আবারও বাংলাদেশের ভোটচুরির প্রক্রিয়ায় তারা যদি অব্যাহতভাবে কাজ করতে থাকে তাহলে ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের চিন্তা করা দরকার। এটার মাধ্যমে যে সব কিছু হবে তা না কিন্তু এটা একটি সিগন্যাল, একটা মেসেজ যে বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে পারছে না, বাংলাদেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, জীবনের নিরাপত্তার শঙ্কার মধ্যে আছে। যাদের কথা (ভিসা নীতিতে) উল্লেখ করেছে— এই লোকগুলো, এই সংস্থাগুলো প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত এবং যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, এই স্টেটমেন্টটা কিন্তু কান্ট্রি স্পেসিফিক। এটা বাংলাদেশের সংগঠনগুলোকে স্পেসিফিক্যালি বলেছে, বাংলাদেশের ব্যক্তিদেরকে স্পেসিফিক্যালি বলেছে একেবারে কম্প্রেহেনসিভলি। যারা যারা নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য, নির্বাচনকে দখল করার জন্য, ভোট চুরির মাধ্যমে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য যত ধরনের সংগঠন-ব্যক্তি এবং দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে বলেছে তারা সরাসরি অ্যাড্রেস করেছে।
খসরু বলেন, এরমধ্যে তারা বিচার বিভাগের কথা বলেছে, সাংবাদিকদের কথা বলেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথা বলেছে, সরকারি কর্মকর্তাদের কথা বলেছে যারাই ভোট চুরির সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকবে সবার প্রতি এটা যুক্তরাষ্ট্র অ্যাপ্লাই করবে।

এই ভিসা নীতির ঘোষণায় দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশকে অর্জন করতে হবে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র থাকবে কি থাকবে না, বাংলাদেশে মানবাধিকার, বাংলাদেশে আইনের শাসন, জনগণের নিরাপত্তা ইত্যাদি সব। মুক্তির সংগ্রামের পথে এটা একটা একটা পদক্ষেপ। অনেকগুলো পদক্ষেপ এখানে নিতে হবে যাতে করে তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) আবারও ভোট চুরি করে দেশের ক্ষমতা দখল করতে না পারে।

সরকারি দল যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন নয়, বিএনপি কি উদ্বিগ্ন— প্রশ্ন করা হলে আমির খসরু বলেন, তারা (সরকার) উদ্বিগ্ন না হলে ভালো কথা। তাহলে তাদেরকে (সরকার) বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা এগুলো ফিরিয়ে দিতে হবে। তা না দিলে তাদেরকে উদ্বিগ্ন হতে হবে।

এ সময় বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু ও মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বুধবার (২৪ মে) এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের জন্য যে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের স্বার্থেই তাদের এই পদক্ষেপ। বিবৃতিতে ব্লিঙ্কেন বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে যারা এগিয়ে নিতে চায়, তাদের সবাইকে সমর্থন দিতে এই নীতি ঘোষণা করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত