সিলেটটুডে ডেস্ক

০২ জুন, ২০২৩ ১৭:৫২

প্রস্তাবিত বাজেটের উল্লেখযোগ্য দিক সর্বজনীন পেনশন: তথ্যমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

প্রস্তাবিত বাজেটকে (২০২৩-২৪ অর্থবছর) গরিববান্ধব ও গণমুখী বলে অভিহিত করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘অনেকে ভালোভাবে বাজেট না দেখে সমালোচনায় ব্যস্ত। বরাবরের মতোই তাদের সমালোচনা গৎবাঁধা ও গতানুগতিক। বাজেটের সবচেয়ে বড় উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, এই অর্থবছরেই প্রথম সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে; যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন্তাপ্রসূত। কোনো রাজনৈতিক দল এ ধরনের প্রস্তাব দেয়নি। আপনারা বিএনপির দাবি-দাওয়া জানেন। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য, তার ও তারেক জিয়ার সাজা থেকে মুক্তির বাইরে জনমানুষ নিয়ে তাদের কোনো দাবি থাকে না।’

শুক্রবার (২ জুন) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি আওয়ামী লীগের টানা ১৫তম বাজেট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০তম। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৮-০৯ অর্থবছরের তুলনায় এবারের বাজেট প্রায় নয়গুণ বড়। পিপিপিতে (পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি) ২০০৯ সালে জিডিপি ছিল ১০০ বিলিয়ন ডলার; যা এখন এক ট্রিলিয়ন প্লাস ডলার, অর্থাৎ প্রায় দশগুণ বেশি। এটি তো নিঃসন্দেহে দেশের অগ্রগতি সমৃদ্ধির পরিচায়ক।’

করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ সৃষ্ট বৈশ্বিক মন্দার কারণে অর্থনৈতিক শৈথিল্যের ফলে বাজেট প্রণয়ন চ্যালেঞ্জিং ছিল বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তারপরও আগেরবারের চেয়ে এক লাখ কোটি টাকার বেশি বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। এই খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। এ ছাড়াও মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে আনা এবং এ খাতে বিভিন্ন ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।’

আয়কর বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের কর ও জিডিপির অনুপাত দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। গত ১৪ বছরে দেশের জিডিপি প্রায় দশগুণ বেড়েছে। বাজেটের আকার প্রায় নয়গুণ বৃদ্ধি পেয়ছে, কিন্তু আয়কর দেওয়ার হার বেড়েছে মাত্র ৩ গুণ। ২০০৯ সালে ১১ লাখ মানুষ আয়কর দিত। গত বছর দিয়েছে ২৯ লাখ মানুষ। অথচ দেশে অন্তত দুই কোটি মানুষ আয়কর দিতে সক্ষম। কিন্তু মানুষ কর দিতে চায় না। তাই করের আওতা বাড়ানো অযৌক্তিক নয়।’

‘আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে এ বাজেট লুটপাটের’- বিএনপির এমন সমালোচনা খণ্ডন করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে বাজেট দিতেন। প্রতিবার বাজেটের আগে প্যারিস কনসোর্টিয়ামে ছুটে যেতেন সাহায্যের জন্য। বর্তমানে বাংলাদেশের বাজেট কোনোভাবেই বিদেশি সাহায্যনির্ভর নয়। সাড়ে সাত লাখ কোটি টাকার বেশি বাজেটে বিদেশি ঋণের পরিমাণ রাখা হয়েছে এক লাখ কোটি টাকার কিছু বেশি। বিএনপি লুটপাটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। তারা পরপর পাঁচবার দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল। তাদের মুখে লুটপাটের অভিযোগ শুনলে হাসি পায়।’

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ- সিপিডি বাজেটকে বাস্তববিবর্জিত বলেছে, এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৪ বছরে সিপিডি বাজেটের প্রশংসা করতে পারেনি। এ বছর তো বাজেট প্রস্তাব অধিবেশন চলমান থাকা অবস্থায়ই তারা বলেছে, এই বাজেট উচ্চাভিলাষী, বাস্তবায়ন হবে না। অথচ বাংলাদেশের বাজেট বাস্তবায়নের গড় হার ৯৭ শতাংশ। ডলারের মূল্য না বাড়লে এত দিনে আমাদের মাথাপিছু আয় তিন হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেত।’

তিনি বলেন, ‘গত ১৪ বছরে দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে কমে ১৮ শতাংশে নেমেছে। এগুলো তাদের চোখে পড়ে না। আসলে সিপিডিকে তাদের পাণ্ডিত্য দেখাতে হয়। ভুল ধরাটাই তাদের পেশা। এভাবেই তারা নানা জায়গা থেকে ফান্ড পায়। এ কারণেই তারা প্রশংসা করতে পারে না।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত