নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ ফেব্রুয়ারি , ২০২৪ ০০:৪২

অভিজিৎ স্মরণে সোমবার আলোর মিছিল ও স্মরণসভা

বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন, আলোর মিছিল ও স্মরণসভার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৫টায় রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির মোড়ে (হত্যাকাণ্ডের স্থলে) এই কর্মসূচি পালিত হবে নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগের ব্যানারে।

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অমর একুশে বইমেলা চলাকালে ধর্মীয় উগ্রবাদীরা কুপিয়ে হত্যা করে লেখক অভিজিৎ রায়কে।

হত্যাকাণ্ডের পরের দিন অভিজিৎ রায়ের পিতা অজয় রায় বাদী হয়ে মামলা করেন। শুরুতে ডিবি পুলিশের হাতে তদন্তকাজ থাকলেও ২০১৭ সালে তদন্তভার পায় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। চার বছরের তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয় ১৩ মার্চ, ২০১৯। চার্জশিটে ৬ জনকে আসামি করা হয়। আদালতে অভিযোগপত্র গ্রহণ হলে বিচার শুরু হয় ওই বছরেরই ১ আগস্ট, ২০১৯। ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করা হয় হত্যা মামলার।

এ মামলায় অভিযুক্ত ছয় আসামির মধ্যে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক ওরফে জিয়া, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম ওরফে সাজ্জাদ ওরফে শামস), আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়৷ তারা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য। আরেক আসামি উগ্রপন্থি ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবী ‘হত্যার প্ররোচনা’ দেওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের মধ্যে জিয়া ও আকরাম পলাতক।

অভিজিৎ রায়ের জন্ম ১৯৭১ সালে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে অভিজিৎ রায়ের গর্ভবতী মা শেফালি রায়কে ভারতের আসামে রেখে বাবা অজয় রায় অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধে। দেশ স্বাধীনের চারদিন আগে আসামের শিবনগরের নাজিরা ম্যাটারনিটি সেন্টারে ১২ সেপ্টেম্বর জন্ম নেন অভিজিৎ। তার পিতা একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. অজয় রায়।

উদয়ন স্কুল থেকে ১৯৮৮ সালে এসএসসি পাস করেন অভিজিৎ। এরপর ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৯০ সালে এইচএসসি পাস করার পরে ভর্তি হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট)। বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে তার উচ্চশিক্ষার শুরু। বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পিএইচডি করেছিলেন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর থেকে।

অভিজিৎ রায় ব্লগ, ফেসবুক, ম্যাগাজিন এবং দৈনিক পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন। মৃত্যুর পূর্বে প্রকাশিত তার বইগুলো হল- আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী’ (২০০৫), মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে (২০০৭), স্বতন্ত্র ভাবনা : মুক্তচিন্তা ও বুদ্ধির মুক্তি (২০০৮), সমকামিতা: বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান (২০১০), অবিশ্বাসের দর্শন (২০১১), বিশ্বাস ও বিজ্ঞান (২০১২), ভালবাসা কারে কয় (২০১২) ,শূন্য থেকে মহাবিশ্ব (২০১৪), ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো: এক রবি-বিদেশিনীর খোঁজে (২০১৫)।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত