বাসস

১২ এপ্রিল, ২০২৪ ২৩:২৮

কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসিয়ে রাঙামাটিতে বৈসাবি উৎসবের সুচনা

কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে রাঙামাটিতে শুরু হয়েছে বৈসাবি উৎসব। এটি পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ১৪টি ক্ষুদ্র নৃ -জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব।

বৈসাবিকে ঘিরে ৩দিনের উৎসবের মধ্যে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) প্রথম দিন সকালে কাপ্তাই হ্রদে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে ফুল ভাসানো হয়। এটি চাকমাদের বিজু, মারমাদের সাংগ্রাই ও ত্রিপুরাদের বৈসুক উৎসব নামেও পরিচিত। ত্রিপুরারা ফুল ভাসানোর পাশাপাশি বয়স্ক স্নান ও বস্ত্র বিতরণ করেন এই উৎসবে। সেই সঙ্গে চলে পাহাড়ি ঐতিহ্যবাহী নৃত্যগীত।

সকাল থেকে পাহাড়ি নারীরা বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করে একে একে চলে আসে কাপ্তাই হ্রদে। সৃষ্টিকর্তার আর্শিবাদ প্রার্থনা করে কাপ্তাই হ্রদে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে পানিতে ফুল ভাসিয়ে দেয় তারা। এসময় ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত হয়ে এই ফুল ভাসানোর উৎসবে অংশ নেন পাহাড়ি মানুষ।

রাঙামাটির গর্জনতলীতে ফুল ভাসিয়ে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসুক উৎসবের উদ্বোধন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ঝিনুক ত্রিপুরা, ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা প্রীতি কান্তি ত্রিপুরা, জেলা পরিষদ সদস্য বিপুল ত্রিপুরাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে জেলার কাপ্তাইয়ে তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু উৎসবে যোগ দেন সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা। উৎসবের প্রথম দিনকে চাকমারা ফুল বিজু , ত্রিপুরারা বৈসুক ও তঞ্চঙ্গ্যারা ফুল বিষু নামে পালন করছে।

জেলা শহর ছাড়াও রাঙামাটির ১০ উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীরাও একই ভাবে পালন করছে বৈসাবির দিনব্যাপী উৎসব।

রাঙামাটি বৈসাবি উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইন্টু মনি তালুকদার বলেন, বৈসাবি উৎসব উপলক্ষে সকালে রাজবাড়ি ঘাটে কাপ্তাই হ্রদে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে ফুল ভাসিয়ে উৎসবের সুচনা করেছি। পুরাতন বছরের গ্লানি ভুলে ভবিষ্যতে সুন্দর জীবনের প্রত্যাশায় আমরা সকলে প্রার্থনা করেছি। আগামী বছরগুলোতে যেন বিশ্বের সকল মানুষ ভালো থাকে এবং পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সেতুবন্ধন সুদৃঢ় থাকে এটাই সকলের প্রত্যাশা।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) মুল বিজু পালিত হবে। ঐতিহ্যবাহী পাঁজন রান্না করে অতিথি আপ্যায়নের মধ্যদিয়ে শুরু হবে মুল বিজুর আনুষ্ঠানিকতা। আগামী ১৪ এপ্রিল পালিত হবে গোজ্যেপোজ্যে।

আগামী ১৫ ও ১৬ এপ্রিল রাঙামাটি চিং হ্লা মং মারি স্টেডিয়ামে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই জলোৎসবের মধ্যদিয়ে সমাপ্তি ঘটবে বৈসাবি উৎসবের।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত