নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ ফেব্রুয়ারি , ২০১৬ ০১:২২

ব্লগার রাজীব হায়দার হত্যার ৩ বছরপূর্তি আজ

ব্লগার ও স্থপতি আহমেদ রাজীব হায়দার (থাবা বাবা) হত্যার তৃতীয় বার্ষিকী আজ। ২০১৩ সালের এ তারিখে নিজ বাড়ির সামনে কুপিয়ে হত্যা করে উগ্র ধর্মীয় সন্ত্রাসীরা।

রাজীব হায়দার ছিলেন ব্লগার ও গণজাগরণ আন্দোলন কর্মী। তিনি ব্লগে 'থাবা বাবা' নামে লিখতেন।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন রায়ের বিরুদ্ধে জেগে ওঠা গণজাগরণ আন্দোলন কর্মী ছিলেন রাজীব হায়দার। আন্দোলনের উত্তুঙ্গু সময়ে  ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পল্লবী থানাধীন কালশীর পলাশনগরে নিজ বাড়ির সামনে ব্লগার রাজীব হায়দারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় তাঁর বাবা নাজিম উদ্দীন পল্লবী থানায় হত্যা মামলা করেন।

২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি এ মামলায় জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানীসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এ মামলায় মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানীসহ সাত আসামি কারাগারে আটক আছেন। ২৮ ডিসেম্বর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক সাঈদ আহমেদ ৩১ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে ফয়সাল বিন নাইম ও রেদোয়ানুল আজাদ রানা নামে দুজনের ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। মাকসুদুল হাসান অনিক নামে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এহসান রেজা রুম্মান, নাইম শিকদার ও নাফিজ ইমতিয়াজকে ১০ বছর করে এবং সাদমান ইয়ানির মাহমুদকে তিন বছর এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান জসীম উদ্দিন রাহমানীকে পাঁচ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

রাজীব হত্যাকাণ্ডে জড়িত আটজনকে আদালত বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তি দিলেও একমাত্র পলাতক অবস্থায় আছে রানা। সে কোথায় সে খবরও জানে না পুলিশ, গোয়েন্দা সহ সরকারের কোন বাহিনীই। তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

রাজীব হায়দারের হত্যাকাণ্ডের পর দেশে একাধিক ব্লগার-লেখক-প্রকাশকদের হত্যা করে ধর্মীয় সন্ত্রাসীরা। ২০১৫ সালে ২৬ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞান লেখক, ব্লগার অভিজিৎ রায়কে হত্যা করার পর একে একে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ওয়াশিকুর বাবু, অনন্ত বিজয় দাশ, নিলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় (নিলয় নীল) ও প্রকাশক ফায়সাল আরেফিন দীপন।

সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে প্রকাশক আহমেদুর রশীদ টুটুল, লেখক রণদীপম বসু ও তারেক রহিমের ওপর।

দেশে একাধিক ব্লগার-লেখক-প্রকাশকদের হত্যা ও হত্যা চেষ্টা হলেও নিম্ন আদালতের বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে কেবল রাজীব হায়দারের।  

এদিকে, রাজীব হায়দার হত্যার তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণজাগরণ মঞ্চ। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫ টায় শাহবাগে সমাবেশ ও সন্ধ্যায় রাজীব হায়দারের প্রতিকৃতিতে আলোক প্রজ্বলনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত