সিলেটটুডে ডেস্ক

২৭ এপ্রিল, ২০১৬ ১৯:৫০

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে, মানুষ ন্যায়বিচার ‍পাচ্ছে : সংসদে প্রধানমন্ত্রী

সন্দেহভাজন জঙ্গিদের হামলায় গত এক বছরে বেশ কয়েকজন লেখক, প্রকাশক, অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট খুনের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ‘বিপজ্জনক’ পর্যায়ে বলে বিএনপি দাবি করলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

বুধবার সংসদে সরকার প্রধানের এই বক্তব্য আসার আগে এই সপ্তাহেই রাজশাহীতে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এবং ঢাকায় এক সমকামী অধিকারকর্মী ও এক নাট্যকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

এই দুটি হত্যাকাণ্ডের একটিতে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল  কায়দা এবং অন্যটিতে আইএসের নামে দায় স্বীকারের বার্তা আসে। তবে এতে আন্তর্জাতিক কোনো জঙ্গি সংগঠনের সম্পৃক্ততার খবর সরকারের তরফে নাকচ করা হচ্ছে।  

সংসদে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ জঙ্গি তৎপরতার কথা তুলে ধরে তা প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপ জানতে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন রেখেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর ‘প্রশ্নোত্তরপর্বে’ রাখা এই প্রশ্ন নিয়ম অনুযায়ী কিছু দিন আগেই জমা দিতে হয়। উত্তরও আগেই তৈরি করা হয়, যা নির্ধারিত দিনে প্রধানমন্ত্রী সংসদে উপস্থাপন করেন।

কাজী নাবিলের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। মানুষ ন্যায়বিচার ‍পাচ্ছে।

“আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকার ফলে সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে,” উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই কারণে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ছে।

গত বছরের  ফেব্রুয়ারিতে লেখক অভিজিৎ রায়ের পর একে একে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান বাবু, নীলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় নিলয়, অনন্ত বিজয় দাস, প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন।

তাদের মতো এই বছরে চলতি মাসের শুরুতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নাজিমুদ্দিন সামাদকে। তারপর এই সপ্তাহে খুন অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম এবং জুলহাজ মান্নান ও মাহবুব রাব্বী তনয়।

এছাড়া দুজন বিদেশি, খ্রিস্টান যাজক, হিন্দু পুরোহিতের পাশাপাশি শিয়া ও আহমদিয়া সম্প্রদায়ও আক্রান্ত হয়েছে গত বছর।

এসব হত্যাকাণ্ডে দেশীয় জঙ্গিদেরই সন্দেহ করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তবে একটি ক্ষেত্রেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় এখনও বিচার শুরু করা যায়নি।

প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলার মামলার রহস্য উদ্ঘাটনে সফলতার পরিচয় দিয়েছে।

“ইতোপূর্বে জঙ্গি,সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কার্যকলাপের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের কর্মকাণ্ড ও গতিবিধি সম্পর্কে গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জঙ্গি ও সন্ত্রাসীসহ সকল অপরাধীদের কর্মকাণ্ড রোধে তাদের অর্থের জোগানদাতা ও অর্থের উৎস সন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”

জঙ্গি ও নাশকতাকারী এবং এর হুকুমদাতাদের আইনের আওতায় আনতে সরকারের পক্ষ থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া রয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

আরেক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা সংসদে বলেন, প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এর মধ্যে দুটি স্থাপত্য নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে।

“এই নকশা চূড়ান্ত করার কাজ সমাপ্ত হলেই প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ নির্মণের প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হবে।”

ইসলামিক ফাউন্ডেশন এই মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বলে সংসদে জানানো হয়। মসজিদের ইমাম নিয়োগ বা তাদের বেতন এই সংস্থাই ঠিক করবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত