সিলেটটুডে ডেস্ক

১২ জুন, ২০১৬ ২৩:১২

তনুর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন : মায়ের দাবি- মিথ্যা, বাবা বললেন- ফালতু

সোহাগী জাহান তনুর মা আনোয়ারা বেগম দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। অপরদিকে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন এই প্রতিবেদনকে ফালতু বলে মন্তব্য করেছেন।

তনুর মা বলেন, প্রতিবেদন দিতে যে দেরি হয়েছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট নই। এ প্রতিবেদন মিথ্যা। প্রতিবেদন যদি মিথ্যা না হয়, তাহলে তদন্তকারীরা কিভাবে বললেন, আমার মেয়ের রিলেশন ছিল? আমি মেয়ে হত্যার সঠিক বিচার চাই। রবিবার বিকেলে কুমিল্লার আলোখারচর এলাকায় সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ দাবি করেন।

আনোয়ারা বেগম বলেন, কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের সেনানিবাস থেকে বের করে দিতে চায়, তাহলে আমরা চলে যাব। আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দিক। তাহলে চাকরি ছেড়ে আমরা চলে যাব। এ সময় তনুর ভাই আনোয়ার হোসেন রুবেলও উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে, এই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, “যেইটা বলছে, সেইটা ভুয়া বলছে, বানায়ে বলছে।”

আরও পড়ুন : তনু হত্যা: ‘সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স’ হয়েছে, মৃত্যুর কারণ এবারও মেলেনি

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান কামদা প্রসাদ সাহা নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ড তাদের এই প্রতিবেদনে মৃত্যুর আগে তনুর ‘সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স’ হওয়ার কথা বলেছে।

এর মাধ্যমে তারা ‘ধর্ষণ’ বোঝাচ্ছেন কি না- সাংবাদিকদের এই প্রশ্ন তারা এড়িয়ে গেছেন।

প্রতিবেদন দেওয়ার পর কামদা প্রসাদ সাহা সাংবাদিকদের বলেন,“যেহেতু দশ দিন পর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে, মৃতদেহ পচা ছিল, দশ দিন পর পচা গলা মৃতদেহ থেকে নতুন করে কোনো ইনজুরি বোঝা সম্ভব হয়নি।”

তনুর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে পুলিশকে আরও তদন্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক।

সেনানিবাস বোর্ডের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইয়ার হোসেন বলেন, চাকরির কারণে তাকে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার আগে অনুমতি নিতে হয়। এ কারণে তিনি বিস্তারিত কিছু বলতে পারছেন না।

তবে তনুকে হত্যার আগে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে জানিয়ে এ মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি যে প্রতিবেদন দিয়েছে, সেটি ‘সঠিক’ বলে মনে করছেন ইয়ার হোসেন।

দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, “আলতু ফালতু কথা কইয়া লাভ আছে?

গত ২০ মার্চ তনুর লাশ কুমিল্লা সেনানিবাসে বাসার অদূরের জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়। ২১ মার্চ তনুর লাশের প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। এতে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত নয় এবং ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন দেন চিকিৎসক শারমিন সুলতানা। ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন তনুর বাবা-মা। পরবর্তীতে ২৮ মার্চ আদালত নির্দেশ দেন, তনুর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করার। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ মার্চ তনুর লাশ মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুরে গ্রামের বাড়ির কবরস্থান থেকে উত্তোলন করা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত