সিলেটটুডে ডেস্ক

১৬ জুন, ২০১৬ ২৩:৫২

সাঁড়াশি শেষ, চলবে জঙ্গি বিরোধী অভিযান

শুধু তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান শেষ হয়েছে। তবে এখন থেকে জঙ্গিবিরোধী বিশেষ অভিযান চলবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
 
গত ৫ দিনে বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া প্রাপ্ত তথ্য থেকে চলমান অভিযানে গত রাত পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ১৩ হাজার ৩৭৮ জনকে।

পুলিশের দাবি অনুযায়ী তাদের মধ্যে ১৭৬ জন জঙ্গি। এবারের অভিযানে দুর্ধর্ষ কোনো জঙ্গিকে গ্রেফতার করা যায়নি। এমনকি গত ১৮ মাসে উগ্রপন্থিদের ৪৭টি হামলায় যে ৪৯ জন নিহত হয়েছেন, তাতে জড়িত কাউকে গ্রেফতারের কথাও পুলিশ জানাতে পারেনি। এবারের 'জঙ্গিবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান' নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে।

প্রথমত, আগাম ঘোষণা নিয়ে এমন প্রক্রিয়ায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নজির নেই বললেই চলে। দ্বিতীয়ত, জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গিয়ে অন্যান্য মামলায় ১২ সহস্রাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ আছে, অনেক এলাকা থেকে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের সবাইকে আদালতে হাজির করা হয়নি। অনেকে থানা বা পুলিশের হেফাজত থেকে 'উধাও' হয়ে গেছে।

এমনকি অনেককে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা মামলা ছাড়াই গ্রেফতার করা হয়েছে। ঈদের আগে সাঁড়াশি অভিযানে কোনো কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে 'বাণিজ্য' করার অভিযোগ উঠেছে।

উচ্চ আদালতের নির্দেশনার কারণে এবারের অভিযানে ৫৪ ধারার লাগামহীন প্রয়োগ না থাকলেও গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত পুরনো আসামির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ছয় হাজার ২৬ জনই পরোয়ানাভুক্ত আসামি। এদিকে, ঘোষিত জঙ্গিবিরোধী অভিযান আজ শেষ হলেও উগ্রপন্থিদের বিরুদ্ধে নজরদারি যথারীতি চলবে।

সাঁড়াশি অভিযানে গণগ্রেপ্তার ও পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার বাণিজ্যর অভিযোগ উঠায়  পুলিশ এ অভিযানের পরিবর্তে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপিও এ ব্যাপারে অভিযোগ করে আসছিল যে, বিশেষ অভিযানের নামে কার্যত বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। পুলিশি অভিযানে যাতে কোনো সাধারণ নাগরিক হয়রানির স্বীকার না হয়, সেজন্যে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় এ অভিযান নয়। এটা শুধু তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। বিএনপি যদি সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের তাদের নেতাকর্মী মনে করে তাহলে তো আমাদের কিছু করার নেই।

পুলিশ সদর দফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশনা আমরা পেয়েছি। কিন্তু এই নির্দেশনার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পুলিশ অভিযানের শুরু থেকেই করে আসছে। যেদিন থেকে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে সেদিন থেকে দেশব্যাপী মাঠ পর্যায়ে কর্মরত পুলিশ বাহিনীকে পুলিশ সদর দফতর থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে কোনো সাধারণ মানুষ হয়রানির স্বীকার না হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত