সিলেটটুডে ডেস্ক

১৭ জুলাই, ২০১৬ ২২:৪৩

জঙ্গিবাদ বিরোধী খুৎবা প্রত্যাখ্যান করল হেফাজত

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ঠিক করে দেয়া দেশব্যাপী জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিন্ন খুৎবা প্রত্যাখান করেছে ধর্ম ভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

রোববার (১৭ জুলাই) সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের এক বৈঠকে শেষে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ঠিক করে দেয়া খুৎবাকে 'সরকারি খুৎবা' আখ্যা দিয়ে  এ খুতবাকে ধর্মীয় বিষয়ে সরকারের অবৈধ হস্তক্ষেপ উল্লেখ করে প্রতিবাদও জানিয়েছে সংগঠনটি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নামায ইসলামের মৌলিক ইবাদত। নামায-রোযাসহ ইসলামের ইবাদত-বন্দেগীকে দলীয়করণ ও সরকারিকরণ করা যাবে না। দেশের উলামা-মাশায়েখ ও দলমত নির্বিশেষে সকল মুসলিম জনতা ইবাদত-বন্দেগীতে সরকারের অবৈধ ও অন্যায় হস্তক্ষেপ, নিয়ন্ত্রণারোপ কখনোই বরদাস্ত করবে না বলেও সরকারের প্রতি বৈঠকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ হয়।

সংগঠনটি মসজিদের খতীবগণের প্রতি আদর্শ ও শান্তিপূর্ণ মানুষ, সমাজ ও দেশগঠনমূলক পবিত্র কোরআনের আয়াত ও হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে ইসলামের শুরু থেকে চলে আসা নিয়মে খুতবাদানের আহ্বান জানিয়েছে।

সম্প্রতি দেশে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলা, গুম, খুনের আশঙ্কাজনক বৃদ্ধি এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক দেশের মসজিদসমূহে জুমার বয়ান ও খুতবা নির্দিষ্ট করে দেয়ার বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কার্যালয় দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসায় রোববার এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের নেতারা আরো বলেন, মুসল্লিদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি নানা পদের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সকল দলমতের মানুষ থাকেন, মসজিদ কমিটির লোক থাকেন। সুতরাং খতীব সাহেবদের কোন বিভ্রান্তিমূলক বয়ান পেশের সুযোগই নেই। দেশ ও জনগণের স্বার্থে এ পর্যায়ে সরকার চাইলে মসজিদের খতীবগণকে সুনির্দিষ্ট বিষয়ে ইসলামের আলোকে বয়ান উপস্থাপনের জন্যে অনুরোধ করতে পারেন। আর সরকারের জনস্বার্থমূলক অনুরোধে খতীবসাহেবগণ অবশ্যই সহযোগিতা করবেন।

বৈঠকে হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী, নায়েবে আমীর ও ঢাকা মহানগরীর আহ্বায়ক আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মুঈনুদ্দীন রুহী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আনাস মাদানী, সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, আমীরের প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদ, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মুজিবুর রহমান পেশোয়ারী, মাওলানা হাকীম আব্দুল করীম খান, মাওলানা উবায়দুর রহমান খান, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মুফতী আব্দুস সাত্তার, মুফতী আজহারুল ইসলাম ও মাওলানা শরীফুল্লাহ প্রমুখ।

প্রসঙ্গত গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর শুক্রবারের জুমার নামাজের খুতবা নজরদারি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জুমার খুতবার মধ্য দিয়েও অনেক মসজিদ থেকে উগ্রবাদ ছড়ানো হয় বলেও বিভিন্ন মহল থেকেও অভিযোগ আসে। পরে ইসলামিক ফাউন্ডেশন খুৎবা ঠিক করে দেয় যাতে  শান্তি শৃঙ্খলার প্রতি জোর দেয়া হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ঠিক করে দেয়া খুৎবায় "ইসলাম অন্যায়ভাবে একটি পিঁপড়া হত্যাও সমর্থণ করে না", "ভিন্ন মতের মানুষ হলেও ইসলাম হত্যা সমর্থণ করে না" এসব প্রচারে জোর দেয়া হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত