সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ মে, ২০১৭ ২৩:৩৬

পাসের হার বাড়িয়ে দেয়ায় শিক্ষার মান কমেছে: খালেদা

আত্মতুষ্টির জন্য পাসের হার বাড়িয়ে দেয়ায় শিক্ষার মানের ক্রমাবনতি ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর লেডিজ ক্লাবে এক সেমিনারের সমাপনী অধিবেশনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

'বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা ও আমাদের ভবিষ্যৎ' শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে বিএনপি।

খালেদা জিয়া বলেন, 'আত্মতুষ্টির জন্য পাসের হার বাড়িয়ে দেয়ায় শিক্ষার মানের ক্রমাবনতি ঘটেছে। এই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে না পারলে আগামী দিনে আমাদের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে, আমরা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ব।'

তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ একাধিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু রয়েছে। প্রত্যেকটি ব্যবস্থার লক্ষ্য ভিন্ন ভিন্ন। এই ভিন্নতার সঙ্গে সমাজে বিরাজমান যে শ্রেণী ও অর্থনৈতিক বৈষম্য আছে তা সম্পর্কিত। মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য তারা নিজেই যেখানে অর্থের সংস্থান করে, সমাজের সুবিধাভোগীরা সেখানে ভিন্ন ধরনের শিক্ষার জন্য অর্থ ব্যয় করে।

খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে প্রচলিত সবধরনের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করতে হবে। কারণ, সকল শিক্ষার মধ্যেই ইহলৌকিক ও পরলৌকিক জীবন সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা আছে।

তিনি বলেন, দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে বিএনপির নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা আছে। যেভাবে দেশের জনসংখ্যা বাড়ছে তার সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলে, ভবিষ্যতে আমাদের চরম প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হবে।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বিভিন্ন মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে দেখেছি- আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন প্রয়োজন। এমন পরিবর্তন প্রয়োজন যা দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করবে, শিক্ষার সুফল সকল মানুষের জীবনে পৌঁছাবে।'

তিনি বলেন, শিক্ষা মানুষকে গণতন্ত্রের প্রতি, ভিন্নমতের প্রতি ও ভিন্নমত প্রকাশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শিক্ষা দেয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য- বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার শিক্ষার এই মৌলিক লক্ষ্যকে পদদলিত করছে।

সকাল থেকে চার পর্বের এই সেমিনারে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা, শিক্ষার বিভিন্ন ধারা, উচ্চ ও অগ্রসর শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার ওপর আলোচনা সভা হয় যাতে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষাবিদরা অংশ নেন।

সকালে শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে এই সেমিনারের উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ।

সমাপনী অধিবেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আখতার হোসেন খান দিনব্যাপী সেমিনারের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসললাম ও হেলেন জেরিন খানের পরিচালনায় সমাপনী অধিবেশনে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ 'শিক্ষা দর্শন' বিষয়ক প্রবন্ধ পাঠ করেন।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মধ্যে আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, নুরুল আমিন, খলিলুর রহমান, লুৎফর রহমান খান, তাজমেরী এস এ ইসলাম, জাহিদুল ইসলাম, সুকোমল বড়ুয়া, আবদুল লতিফ মাসুম, এম এনামুল্লাহ (পারভেজ), ছিদ্দিকুর রহমান খান, মাহমুদুল হাসান, খসরুল আলম, নজরুল ইসলাম, নাজমুস সালাত, মামুন আহমেদ, এমতাজ হোসেন, মোরশেদ হাসান খান, মোহাম্মদ ইকবাল, সিরাজুল ইসলাম, শাহ শামীম আহমেদসহ ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনাসহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকরা অংশ নেন।

এছাড়া বিএনপির খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান, আবদুল মান্নান, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, শওকত মাহমুদ, ইসমাইল জবিউল্লাহ, অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, নুরী আরা সাফা, ফরিদা মনি শহীদুল্লাহ ও ২০ দলীয় জোটের আন্দালিব রহমান পার্থ, এটিএম ফজলে রাব্বী চৌধুরী, মোস্তফা জামাল হায়দার, সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, রেদোয়ান আহমেদ, শফিউল আলম প্রধান, ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তফিজুর রহমান ইরান, আজহারুল ইসলাম, সাঈদ আহমেদ, গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, খোন্দকার লুৎফর রহমান, এম এম আমিনুর রহমান, সৈয়দ মাহবুব হোসেন, গোলাম মোস্তফা আখন্দ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত