সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ জুলাই, ২০১৭ ১৫:৩৪

ফরহাদ মজহারের দেওয়া তথ্যে ভুল হলে ব্যবস্থা: পুলিশ

ভুল তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করলে কবি, প্রাবন্ধিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহারের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ২১১ ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম-কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন এ তথ্য জানান।

এরআগে মঙ্গলবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে ফরহাদ মজহারকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। তাকে ডিবিতে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে আব্দুল বাতেন বলেন, ‘অপহরণের বিষয়ে আদালতে ফরহাদ মজহারের ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি ও পুলিশি তথ্য প্রমাণের সঙ্গে অনেক গরমিল পাওয়া গেছে। তাই তাকে ফের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।’

ডিবির যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে কেউ বিভ্রান্ত করে তাহলে পেনাল কোডের ২১১ ধারায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। ফরহাদ মজহারের দেওয়া তথ্য যদি ভুল হয় তাহলে তার বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে।’

এদিকে, গত ১৩ জুলাই (বৃহস্পতিবার) এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ফরহাদ মজহার অপহরণ হননি, তিনি অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন।

অপহরণের নাটক সাজানোর পেছনে কি উদ্দেশ্য থাকতে পারে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি সেদিন বলেন, ‘ফরহাদ মজহারকে অপহরণের অভিযোগ উঠার পরই একটি মহল সরকার, প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিবেশী একটি দেশের বিরুদ্ধে নানা ধরণের বক্তব্য দিতে শুরু করেন। ওই ঘটনার পরই লন্ডনে একটি দল মানববন্ধন করে তাকে অপহরণের মিথ্যা অভিযোগ তোলে। আমরা মনে করেছি তদন্তের পরেই এ বিষয়ে জনগণকে জানানো উচিত। তাই আমরা আমরা শতভাগ স্বচ্ছতা নিয়ে এ ঘটনার তদন্ত শুরু করি।’

আইজিপি আরও বলেন, ‘পুলিশের তদন্তের পর আমার কাছে মনে হয়েছে সরকারকে বিব্রত করার জন্য এবং কিছু টাকা নিজের জিম্মায় নেওয়ার জন্যই অপহরণ নাটক সাজানো হয়েছিলে।’

গত ৩ জুলাই ভোরে নিজের বাসা থেকে বের হয়ে নিরুদ্দেশ হ ফরহাদ মজহার। এরপর তার পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। পরিবারের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই দিন রাতে যশোর থেকে ঢাকাগামী একটি বাস থেকে উদ্ধার করা হয় ফরহাদ মজহারকে।

উদ্ধারের পর ফরহাদ মজহার দাবি করে বলেছিলেন, সরকারকে বিব্রত করতে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল, এবং অপহরণকারীরা ওই দিন সন্ধ্যার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়।

এদিকে, ফরহাদ মজহারের নিরুদ্দেশের ঘটনায় অর্চনা রানি নামের এক নারী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। অর্চনা জানিয়েছেন, ফরহাদ মজহারের সাথে তার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। অর্চনা আরও জানান, তার জন্য ‘টাকা সংগ্রহ’ করতে ওই দিন ফরহাদ মজহার বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে অপহরণ এবং ফরহাদ মজহারের পক্ষ থেকে সন্ধ্যায় তাকে মুক্ত করে দেওয়ার কথা জানানো হলেও খুলনার কয়েকটি জায়গার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় ওই দিন বিকেলে খুলনা শহরে একা ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। একটি দোকান থেকেও তিনি মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন করেছিলেন বলে সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা যায়। তবে এ লেনদেন অর্চনা রানির মোবাইল একাউন্টে হয়েছিল কিনা এনিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত