নিউজ ডেস্ক

০৬ জুন, ২০১৫ ০০:২৯

ভারতে বাংলাদেশি টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার দুয়ার খুলছে

অবশেষে ভারতে বাংলাদেশি টিভি চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার দুয়ার খুলছে। বাংলাদেশকে ‘ব্যতিক্রমী প্রতিবেশী’ বলে বর্ণনা করে বাংলাদেশি চ্যানেল ভারতে দেখানোর বন্দোবস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব এস জয়শঙ্কর। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকে ঘিরে শুক্রবার সংবাদমাধ্যমকে এস জয়শঙ্কর এসব কথা জানান।

জয়শঙ্কর বাংলাদেশি জনগণের দীর্ঘদিনের একটি দাবির সম্ভাব্য মীমাংসার কথা জানান সংবাদ সম্মেলনে। নিজের প্রারম্ভিক বক্তব্যের সময়েই তিনি বলেন, বাংলাদেশি টিভি চ্যানেলগুলির অনুষ্ঠান যাতে ভারতে দেখা যায়, সেই ব্যবস্থা করা হবে।

তবে এটুকু বলতে পারি, ভারতের টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে দেখা গেলেও সে দেশের টিভি অনুষ্ঠান এ দেশে দেখা যায় না। এটা বাংলাদেশের মানুষদের দীর্ঘদিনের দাবি। আমরা ওঁদের সঙ্গে একমত। আমরা চাই বাংলাদেশের টিভি অনুষ্ঠান এ দেশের মানুষ দেখতে পান। কী ভাবে করা হবে তা কালই (শনিবার) জানতে পারবেন।’

মোদির এই সফরে মোট কতগুলি চুক্তি হবে, সে বিষয়ে জয়শঙ্কর কিছু বলেননি। তবে তিনি জানান, ‘আমি সহজে বিশেষণ ব্যবহার করি না। কিন্তু এটা বলছি, সব দিক থেকেই এই সফর ঐতিহাসিক হতে চলেছে।

সফরের কেন্দ্রবিন্দু স্থল সীমান্ত চুক্তি। এই চুক্তি সম্পাদন মোটেই কোনো সাধারণ ব্যাপার নয়। আর এই চুক্তিই সহযোগিতা ও শুভেচ্ছার এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।’ সেই সহযোগিতার আঁধারেই সড়ক, রেল, নদীপথ ও সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় যোগাযোগের বেশ কিছু ব্যবস্থা শুরু হচ্ছে। জয়শঙ্কর বলেন, স্থল সীমান্ত চুক্তির মধ্য দিয়ে ভারত সরকারের দুটি বিষয় প্রতিপন্ন হচ্ছে। প্রতিবেশী প্রথম ও অ্যাক্ট ইস্ট নীতি।

বাণিজ্য-বৈষম্য দূর করতে ভারত একান্তই আগ্রহী জানিয়ে পররাষ্ট্রসচিব জানান, বাংলাদেশ-ভারত-ভুটান-নেপালের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়লে সড়ক পথে বাণিজ্য বহর অত্যন্ত বেড়ে যাবে। এ ছাড়া বাংলাদেশে ভারতীয় লগ্নির জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়া হলে বাণিজ্য-বৈষম্য বহুলাংশে কমবে বলে জয়শঙ্কর আশাবাদী।

প্রধানমন্ত্রী মোদি শনিবার সকালে ঢাকায় আসছেন। স্বাগত সংবর্ধনার পর তিনি শহীদ স্মৃতিস্থলে যাবেন শ্রদ্ধা জানাতে। তার পর যাবেন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংগ্রহশালায়। মধ্যাহ্নভোজের পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আগরতলা-ঢাকা-কলকাতা ও ঢাকা-শিলং-গুয়াহাটি বাস পরিষেবা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করবেন। এর পর স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের সই হবে। সেই সঙ্গে সম্পাদিত হবে অন্যান্য চুক্তি ও সমঝোতা। এর পর দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে শুরু হবে দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে বৈঠক। পররাষ্ট্রসচিব জানান, কয়েকটি ভিত্তি প্রস্তরও স্থাপন করা হবে। শনিবার রাতে মোদির সম্মানে নৈশভোজ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার সফরের দ্বিতীয় দিনে মোদি যাবেন ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। সেখান থেকে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে। ভারতীয় হাইকমিশনের নতুন ভবনেও প্রধানমন্ত্রী যাবেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ দুপুরে। মধ্যাহ্নভোজও সেখানে। তারপর বিরোধী নেত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বাম নেতৃবৃন্দ ও বনিকসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে সমাজের বিভিন্ন মানুষের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী ভারতে ফিরবেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত