রাইআন কাব্য

০৯ জুন, ২০১৫ ০১:৫৫

‘ডিজিটাল’ সরকার: ‘এনালগ’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট

নবম সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামিলীগ সরকারের স্লোগান ছিল ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। ক্ষমতায় আসার পর দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয় সরকার। একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ে তথ্য-প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগলেও মন্ত্রণালয়গুলো উল্লেখযোগ্যভাবে পিছিয়ে আছে।

এ সময়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিতে ব্যর্থ বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকারী সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত এবং পাকিস্তান থেকেও পিছিয়ে রয়েছে তারা এমন অভিযোগ রয়েছে।

৩৬ ঘন্টার রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশে আসার আগে-পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সরকারী ওয়েবসাইটের দীনতা পরিষ্কার হয়ে ওঠেছে। তথ্য সরবারহে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ ওয়েবসাইট।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট ঘেটে দেখা গেছে, নরেন্দ্র মোদীর সফরের প্রথম দিনের সফর শেষে প্রথম দিনে যে সব ডকুমেন্ট হস্তান্তর ও স্বাক্ষরিত হয়েছে তার একটি তালিকা ও দ্বিতীয় দিনের সফরের পর ‘নতুন প্রজন্ম- নয়া দিশা’ শিরোনামের যৌথ ঘোষণার সম্পর্কে একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছে; এর বাইরে আর কোন কিছুই নেই। এমনকি ‘ঐতিহাসিক’ এ সফরের কোন ছবি ওয়েবসাইটে হালনাগাদ করা হয়নি। ‘পিকচার গ্যালারি’ নামে যে বিভাগ আছে সেখানে জুনের আট তারিখ পর্যন্ত সর্বশেষ ছবি হিসেবে ছিল ভারতের সুষমা স্বরাজের ঢাকা সফরের ছবিগুলো।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফেসবুক ও টুইটার আইডি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইটার আইডি, সে দেশের পররাষ্ট্র দপ্তর এমনকি ভারতীয় হাইকমিশন যখন সফরের প্রতিমুহুর্তের খবর টুইটার কিংবা ফেসবুকে দিচ্ছেন, তখন অনুসন্ধানে দেখা যায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক বা টুইটারে অফিসিয়াল কোন আইডি নাই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে ওয়েবসাইট রয়েছে সেখানে নিয়মিতভাবে হালনাগাদও হয় না।

নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর নানা কারণে ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ হলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যই নেই। বাংলাদেশ-ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, গণমাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় মোদীর বাংলাদেশ সফর গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পেলেও মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে দিনশেষে দায়সারা গোছের একটা পোস্ট দেওয়া ছাড়া আর কিছু দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলমের ফেসবুকে ভেরিফাইড পেজ থাকলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাহমুদ আলীর কোন ভেরিফাইড পেজের সন্ধান পাওয়া যায়নি। 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফরে তাঁর আপডেট নিয়মিতভাবে দিয়ে গেছেন টুইটার ও ফেসবুকে। টুইটারে তাঁর ফলোয়ার প্রায় ১৩ মিলিয়ন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ফলোয়ারের সংখ্যা ৬০.১ মিলিয়ন।

লক্ষ্যণিয় বিষয় হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ স্লোগান নিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার করা এবং বাংলাদেশকে ডিজিটালাইড করার পথে অনেকখানি এগিয়ে যাওয়া আওয়ামিলীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ফেসবুক ও টুইটারে কোন ভেরিফাইড আইডি নেই।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত