সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:৩৮

সিলেটে হচ্ছে দেশের চতুর্থ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

দেশের চতুর্থ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হতে যাচ্ছে সিলেটে। এ লক্ষ্যে 'সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৮'-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার (২ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে দেশের চতুর্থ এ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংষ্কার) এনএম জিয়াউল আলম জানান সিলেট বিভাগের আওতাধীন সব সরকারি-বেসরকারি মেডকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং কলেজ বা ইনস্টিটিউশন বা অন্য কোনো মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয় এসব প্রতিষ্ঠানের অ্যাফিলিয়েটেড অথরিটি হিসেবে কাজ করবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েও এমনটি রয়েছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি সিলেটে জনসভায় ঘোষণা দিয়েছিলেন দেশে আরও একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হবে, সেটি হবে সিলেটে। আজ সেই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া আইন অনুমোদন করা হয়েছে। যারা সিলেটের অধিবাসী, তাদের জন্য এটি খুবই আনন্দ ও গর্বের।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার মান বাড়ানো, স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পাশাপশি গবেষণার ক্ষেত্রেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। সিলেট বিভাগের মেডিকেল কলেজগুলো এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অধিভুক্ত থাকবে। নার্সিং ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাও থাকবে।

প্রস্তাবিত আইনে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্দেশ্য, কর্তৃপক্ষ গঠন ও ক্ষমতা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) এখতিয়ার, পাঠদান পদ্ধতি, সংবিধি এবং বিধিমালা প্রণয়ন ও প্রবিধান তৈরির কথা বলা হয়েছে। সিলেট অঞ্চলের মেডিকেল কলেজগুলো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এফিলিয়েটেড (অধীভুক্ত) থাকবে। চিকিৎসা শাস্ত্রের যে কোনো বিষয়ে স্নাতকোত্তর, বিশেষত আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যে কোনো বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণার ওপর গুরুত্ব দেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়া নার্সিংয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পড়ানো হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েও তাই রয়েছে।

আইন অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর (আচার্য) হবেন রাষ্ট্রপতি। উপাচার্য থাকবেন একজন, উপ-উপাচার্য দু'জন এবং একজন কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থাকবেন। বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক বা চিকিৎসা শাস্ত্রে পর্যাপ্ত অভিজ্ঞদের মধ্য থেকে রাষ্ট্রপতি চার বছরের জন্য উপাচার্য নিয়োগ করবেন। তবে একজন উপাচার্য দুই মেয়াদের বেশি থাকতে পারবেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল, অনুষদ, পাঠ্যক্রম কমিটি, বোর্ড অব অ্যাডভান্স, অর্থ  কমিটি, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি, নির্বাচন বোর্ড, নৈতিক কমিটি, শৃঙ্খলা বোর্ড ইত্যাদি কমিটি থাকবে।

সিন্ডিকেটের সভাপতি হবেন উপাচার্য, এতে দু'জন সংসদ সদস্য, উপ-উপাচার্য ছাড়াও বিভিন্ন পেশার লোকজন থাকবেন। সরকারের মধ্যে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অর্থ বিভাগের প্রতিনিধি থাকবেন। আইনে সিন্ডিকেট, একাডেমিক কমিটির ক্ষমতা ও দায়িত্ব ছাড়াও অনুষদ ও বিভাগ কী করবে, ফ্যাকাল্টি কী করবে- সব কমিটির দায়দায়িত্ব বলা রয়েছে।

উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পর রাজশাহী ও চট্টগ্রামে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় পাড়ে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় যে নীতিমালায় হয়েছে, সেই একই নীতিমালায় সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে।

এ ছাড়া আজকের মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সহযোগিতার সমঝোতা স্মারক সম্পর্কে অবহিত করা, ১ মার্চকে জাতীয় ভোটার দিবস ঘোষণা করার প্রস্তাব, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে 'বাংলাদেশ এনার্জিপোর্ট লিমিটেড' নামে কোম্পানি গঠনের জন্য মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন, আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশন এবং জয়েন্ট ভেঞ্চার্স অ্যান্ড শেয়ার হোল্ডার্সের খসড়া অনুমোদনের জন্য আজকের মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন হতে পারে।


আপনার মন্তব্য

আলোচিত