সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ জুলাই, ২০১৮ ১৩:২৭

মুক্তিযোদ্ধা কোটা পরিবর্তনের সুযোগ নেই: মন্ত্রী

উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা রাখতেই হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

বুধবার (১১ জুলাই) সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে চাকুরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক কার্যক্রম বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় হাত দিতে হলে সরকারকে আগে ওই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করে রায় পক্ষে পেতে হবে। আপিল বিভাগের এক আদেশে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা কোটা থেকে তা পূরণ করার সুযোগ দেওয়া হলেও ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা রয়ে গেছে।

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, “তাই এ আদেশ অগ্রাহ্য করে বা পাশ কাটিয়ে বা উপেক্ষা করে ভিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা করা হলে আদালত অবমাননার শামিল হবে বলে আমি মনে করি।”

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আইনগত বাধ্যবাধকতা আছে, আদালতের নির্দেশ যতক্ষণ পরিবর্তন না করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ব্যত্যয় ঘটার কোনো সুযোগ নাই।

এ বিষয়ে আদালতের রায়ের কপি সকালে কোটা সংস্কারে গঠিত সরকারের কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

মন্ত্রী আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে যারা উদ্বিগ্ন, তাদের আশ্বস্ত করতে চাই, এ সরকার যেহেতু আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী তাই আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় হস্তক্ষেপ করা হবে না এবং মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী জনগণের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ আছে বলে মনে করি না।

তবে কোটা পর্যালোচনা কমিটি মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাদে অন্য কোটায় পরিবর্তন আনার সুপারিশ করতে পারবে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রম বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।

অন্যদের মধ্যে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে মোট ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য রয়েছে ৩০ শতাংশ পদ।

কোটার মোট পরিমাণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’। তাদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল সংসদে বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতিই আর রাখা হবে না।

এর ধারাবাহিকতায় গত ২ জুলাই সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দিতে বলে। ওই কমিটি গত ৮ মে তাদের প্রথম বৈঠকে কর্মপন্থা নির্ধারণের পাশাপাশি কোটার বিষয়ে দেশি-বিদেশি তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়।

মন্ত্রীপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বাধীন ওই কমিটিকে ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা বা সংস্কার বা বাতিলে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়ে প্রয়োজনে বর্তমান কোটা পদ্ধতি সংস্কার বা বাতিলের যৌক্তিকতাসহ সরকারের কাছে সুপারিশ দেবে এই কমিটি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত