সিলেটটুডে ডেস্ক

০৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১২:৩৯

ভিকারুননিসার ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় ক্ষোভ, ২ তদন্ত কমিটি

ভিকারুননিসা নূন স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর (১৫) আত্মহত্যার ঘটনায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অভিভাবকেরা। তাঁরা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে ওই স্কুলের শিক্ষকদের খারাপ ব্যবহারের বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছে ক্ষোভ জানাচ্ছেন। এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ এ দুটি তদন্ত কমিটি করে। দুই কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী জানান, তাঁর মেয়ের পরীক্ষা চলছে। রোববার পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষক অরিত্রীর কাছে মোবাইল ফোন পায়। মোবাইলে নকল করছে—এমন অভিযোগে অরিত্রীকে সোমবার তার বাবা-মাকে নিয়ে স্কুলে যেতে বলা হয়।

দিলীপ অধিকারী অভিযোগ করে বলেন, তিনি স্ত্রী ও অরিত্রীকে নিয়ে স্কুলে যান। তাঁর ছোট মেয়েও একই স্কুলে পড়ে। তাঁরা প্রথমে ভাইস প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। কিন্তু ভাইস প্রিন্সিপাল তাঁদের ‘অপমান’ করে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। মেয়ের টিসি (স্কুল থেকে দেওয়া ছাড়পত্র) নিয়ে যেতেও বলা হয়।

অরিত্রীর বাবা বলেন, এরপর তিনি প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। যেখানে স্কুল পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্যও ছিলেন। প্রিন্সিপালও ভাইস প্রিন্সিপালের মতো আচরণ করেন। এ সময় অরিত্রী দ্রুত প্রিন্সিপালের কক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। পরে স্ত্রীসহ তিনি বাড়ি গিয়ে দেখেন অরিত্রী তার কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে। অরিত্রীকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেন তাঁরা। পরে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়।

স্বজনদের দাবি, ওই ঘটনার পর অরিত্রীর বাবা-মাকে ডেকে নিয়ে ‘অপমান করেছিলেন’ অধ্যক্ষ। সে কারণে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করে।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ওই ঘটনার তদন্তে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ঢাকা আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক মো. ইউসুফকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।

মাউশির ঢাকা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক শাখাওয়াত হোসেন এবং ঢাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদকে কমিটিতে রাখা হয়েছে।

আর ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস বলেন, তাদের গঠিত কমিটির নেতৃত্ব দেবেন স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. আতাউর রহমান (অভিভাবক প্রতিনিধি)। এছাড়া তিন্না খুরশীদ জাহান (নারীদের জন্য সংরক্ষিত পদের অভিভাবক প্রতিনিধি) এবং ভিকারুননিসার শিক্ষক ফেরদৌসী বেগম।

অধ্যক্ষ মঙ্গলবার ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, নকল করার কারণে ওই শিক্ষার্থীকে টিসি দেওয়ার তথ্য সঠিক নয়। অরিত্রীকে কেউ আত্মহত্যায় প্ররোচণা দিয়েছে কি না- তা তদন্ত কমিটি তদন্ত করে দেখবে বলে জানান তিনি।

আর শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অভিভাবকরা মিছিল-টিছিল করছেন, বিষয়টা জটিল হয়ে গেল, আমি সেখানে যাচ্ছি। গতকাল শুনেই আমি যথাসম্ভব তথ্য নিয়েছি। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আমি কথা বলেছি। আমি তাদের বলেছি, আপনারা আইনগত দিকটা দেখেন, কারণ এর মধ্যে ক্রিমিন্যাল ব্যাপার আছে একটা। আর আমরা আমাদের বিষয়টা দেখব।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত