সিলেটটুডে ডেস্ক

০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ২৩:০১

তিতাসের মৃত্যু: ফেরিঘাটের তিনজনকে দায়ি করে প্রতিবেদন

‘ভিআইপি সুবিধা’ দেওয়ার নামে ফেরিযাত্রা প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে রাখায় মাঝনদীতে স্কুলছাত্রের মারা যাওয়ার ঘটনায় যুগ্ম সচিব মো. আব্দুস সবুর মণ্ডলকে দায়ি করার কোনও ‘যৌক্তিক কারণ’ নেই বলে জানিয়েছে এই ঘটনা তদন্তে গঠিত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি।

গত ২৫ জুলাই আব্দুস সবুর মণ্ডলের অপেক্ষায় কাঠালবাড়ি ঘাট থেকে ফেরি ছাড়তে বিলম্ব হওয়ায় অসুস্থ তিতাস ঘোষ (১৩) অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যান বলে অভিযোগ ওঠে।

অ্যাম্বুলেন্সে রোগী থাকার পরও ফেরি ছাড়তে বিলম্ব করার জন্য বরং মুন্সিগঞ্জের কাঠালবাড়ি ফেরি ঘাটের তিন কর্মকর্তাকে দায়ি করা যেতে পারে বলেও তদন্ত কমিটি তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। এই তিন কর্মকর্তা হলেন, ঘাটের ম্যানেজার মো. সালাম হোসেন, ব্যবস্থাপনা সহকারী মো. খোকন মিয়া ও উচ্চমান সহকারী মো. ফিরোজ আলম।

তিতাসের মৃত্যুর পর একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত সচিবের নিচে নন এমন একজনকে প্রধান করে ঘটনাটি তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাই কোর্ট। এর পরই মন্ত্রিপরিষদের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল হাসানকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করে সরকার। হাই কোর্টে পেশ করার জন্য কমিটি প্রধান বৃহস্পতিবার তার প্রতিবেদন এটর্নি জেনারেলের অফিসে জমা দিয়েছেন।

প্রতিবেদন গ্রহণকারী ডেপুটি এটর্নি জেনারেল (ডিএজি) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, বাৎসরিক অবকাশের পর হাই কোর্ট খোলার পর তিনি এই প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করবেন। ৪৫ দিনের অবকাশ শেষে ১৩ অক্টোবর হাই কোর্টের কার্যক্রম পুনরায় আরম্ভ হবে।

প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে ডিএজি বাশার বলেন, চিকিৎসার জন্য ঢাকা অভিমুখী অ্যাম্বুলেন্সে লাইফ সাপোর্টের রোগী থাকার ব্যাপারটি ঘাটের তিনি কর্মকর্তা- সালাম, খোকন ও ফিরোজ জানতেন। এরপরও তারা অ্যাম্বুলেন্সটিকে পারাপারে কোনও ধরনের সহায়তা করেননি। উপরন্তু, নির্ধারিত সময়েরও দুই ঘণ্টা পর ফেরি ছাড়া হয় সেদিন। এ কারণে, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটির’ দায় তারা এড়াতে পারেন না।

ঘাটের ওই তিন কর্মকর্তা অ্যাম্বুলেন্সে রোগী থাকার ব্যাপারটি যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মণ্ডলকেও জানাননি। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ আনা যেতে পারে।

২৫ জুলাই রাতে যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডলের গাড়ির অপেক্ষায় প্রায় তিন ঘণ্টা ফেরি বসে থাকায় ঘাটে আটকে পড়া অ্যাম্বুলেন্সে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার চার দিন পর বিষয়টি জানাজানি হলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিতাসের মৃত্যু নিয়ে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারিত হয়। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত