সিলেটটুডে ডেস্ক

০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ২১:১৬

শাহাদাত লাপাত্তা!

পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না শিশু পরিচারিকা নির্যাতনে অভিযুক্ত ক্রিকেটার শাহাদাত এবং তার স্ত্রীকে। তাকে ধরতে রাজধানী ঢাকা ও তার বাইরে অন্তত ৬টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ ও র‍্যাব।

মালিবাগে শাহাদাতের শ্বশুরবাড়িতেও অভিযান পরিচালিত হয়েছে, কিন্তু কোথাও তাকে পাওয়া যায় নি।

শাহাদাতের শ্বশুরবাড়িতে প্রথম দফায় পুলিশ পরিচয়ে অনেক ডাকাডাকি করেও ওই বাসার দরজা খোলেনি কেউই। পাশের ফ্ল্যাটের লোকদের জানানোর পর ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় দরজা খুললে ভেতরে তল্লাশি করে পুলিশ। সেখানে পাওয়া যায় শাহাদাতের ৬ মাসের শিশু সন্তানকে। সেসময় নিচের পার্কিংয়ে শাহাদাতের প্রাইভেট কারটি রাখা ছিলো।

শাহাদাতের শ্বশুর পুলিশকে জানান, মামলা হওয়ার রাতেই শাহাদাত নিজের প্রাইভেট কার ও ৬ মাসের সন্তানকে তাদের কাছে রেখে অজ্ঞাত স্থানে চলে যায়।

এদিকে, শাহাদাত ও তার স্ত্রী সম্পর্কে মিরপুর থানার ওসি ইন্সপেক্টর ভূইয়া মাহবুব হাসান বলেন, শাহাদাত খুবই ধূর্ত প্রকৃতির; নয় তো সে কোনো ধূর্ত লোকের আশ্রয়ে রয়েছে। কয়েক দফা মোবাইল ফোনের সিম বদল করেছে। নিজেদের অবস্থান বদল করেছে আরো বেশি।

তবে মিরপুর অপরাধ বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার কাইমুজ্জামান বলেছেন, শাহাদাতকে গ্রেফতারে সম্ভব সবকিছুই করছেন তারা।

শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে শিশু গৃহকর্মী মাকছুদা আকতার হ্যাপিকে (১১) নির্যাতনের অভিযোগে রোববার রাতে মামলা হয়। তখন থেকেই শাহাদাত এবং তার স্ত্রীকে গ্রেফতারের জন্য খুঁজছে পুলিশ।

মামলার বাদী সাংবাদিক মোজাম্মেল হক রোববার সন্ধায় আহত অবস্থায় হ্যাপিকে উদ্ধার করেন। তার শরীরে বিভিন্ন জায়গায় জখমের দাগ দেখতে পেয়ে থানায় নিয়ে যান। মামলার পরে পুলিশ মেয়েটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

এদিকে, শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতন করে স্ত্রীসহ পলাতক পেসার শাহাদাত হোসেনের এ কেলেঙ্কারি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়ও আলোচিত হচ্ছে। বিবিসি থেকে শুরু করে টাইম ম্যাগাজিনের মতো বিশ্বগণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছেন শাহাদাত।

শাহাদাতের শিশু নির্যাতনের কাহিনী প্রচারের পরের দিন ‘টাইম’ তার অনলাইন সংস্করণে শিরোনাম করেছে, ১১ বছরের শিশু নির্যাতনের জন্য বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারকে খুঁজছে পুলিশ। তারা লিখেছে, পুলিশ তাকে খুঁজে পাচ্ছে না। শাহাদাতের ঘটনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) লজ্জিত।

বিবিসি শিরোনাম করেছে, বাংলাদেশের ক্রিকেটারকে খুঁজছে পুলিশ। তারা লিখেছে, ১১ বছরের শিশু নির্যাতনের অভিযোগে ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন ও তার স্ত্রীকে পুলিশ খুঁজছে। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে ৫ উইকেট পেয়ে শাহাদাত হোসেন লর্ডসের অনার বোর্ডে যে নাম লিখিয়েছিলেন সেটাও উল্লেখ করেছে বিবিসি।

ভারতের ‘এনডিটিভি’ অনলাইন শিরোনাম করেছে, বাংলাদেশী ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতনের আভিযোগে গ্রেফতারের সম্মুখীন। একই রকম শিরোনাম করেছে ভারতের আরেক প্রভাবশালী পত্রিকা ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’।

পাকিস্তানের ‘ডন’ শিরোনাম করেছে, বাংলাদেশের ক্রিকেটার শাহাদাতের বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ। প্রায় একইরকম শিরোনাম করেছে অস্ট্রেলিয়ার ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’।

আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার গণমাধ্যম এবং মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী মিডিয়া খালিজ টাইমস এবং গালফ নিউজ-ও শাহাদাতকে নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে।

এছাড়াও শাহাদাতের খবর ছেপেছে, ব্রিটিশ দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট, ভারতের দ্য হিন্দু, হিন্দুস্থান টাইমস, টাইমস অফ ইন্ডিয়াসহ সবকটি বড় মিডিয়া, পাকিস্তানের দ্য ডন ছাড়াও এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, ডেইলি পাকিস্তান, চীনের জিনহুয়া, হংকংয়ের চায়না মর্নিং হেরাল্ড, হংকং স্ট্যান্ডার্ড, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের মিডিয়াসহ এশিয়া-আফ্রিকার প্রায় সবগুলো বড় গণমাধ্যম।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত