নিজস্ব প্রতিবেদক

০৯ জুলাই, ২০২০ ১৩:৩১

কার সঙ্গে নেই সাহেদ?

রিজেন্ট হাসপাতালের করোনা নিয়ে জালিয়াতির তথ্য প্রকাশের পর বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের ছবি প্রকাশের হিড়িক পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আলোচিত হচ্ছে তার রাজনৈতিক সম্পর্ক, পরিচিতি এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি উপকমিটির সদস্য হওয়া নিয়েও।

মোহাম্মদ সাহেদ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে এই পরিচয়ে তিনি টকশোতে অংশও নিয়েছিলেন। তার ফেসবুকের পরিচিতি অংশেও আছে এই পরিচয়। তবে দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না বললেও দলের নেতারা এটা অস্বীকার করছেন। যদিও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এই পরিচয়ে অংশগ্রহণের সময়ে কেউ সেটা অস্বীকার করেননি।

আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও উপ কমিটির সদস্য সচিব শাম্মী আহমেদ বলেন, “সে (সাহেদ) আমাদের বর্তমান কমিটির সদস্য নয়, নতুন কোনো খসড়া কমিটি আমরা করিনি।”

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম মোহাম্মদ সাহেদকে তারক, ধোঁকাবাজ, মানুষ নামের কলঙ্ক, যাদের কোনো রাজনৈতিক ঐতিহ্য-ইতিহাস নেই আখ্যা দিয়ে বলছেন, “এর সাথে আওয়ামী লীগের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই, আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত কোনো পর্যায়ের কোনো ধরনের পদবীর চিঠি তার নামে আজ পর্যন্ত ইস্যু হয়নি।”

করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া, নিয়ম বহির্ভূতভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় এবং মেয়াদপূর্তির পরও লাইসেন্স নবায়ন না করায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বেসরকারি রিজেন্ট হাসপাতাল। র‌্যাবের দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, ওই হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ‘প্রকৃতপক্ষে একজন ধুরন্ধর, অর্থ লিপ্সু এবং পাষণ্ড’।

রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা, সরকারি আমলা, সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজের অসংখ্য ছবি তিনি সেখানে দিয়ে রেখেছেন। তার ফেসবুকের টাইমলাইনে শোভা পাচ্ছে খেলাধুলায় অংশগ্রহণের ছবিও।

এদিকে বিএনপির এক সময়ের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গেও সাহেদের পুরনো কিছু ছবি ফেসবুকে এখন শেয়ার করছেন অনেকে। বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সঙ্গে সখ্য এবং সেই সূত্রে সাহেদের হাওয়া ভবনের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠার কাহিনীও কেউ কেউ লিখছেন।

জানা যাচ্ছে, সাতক্ষীরার ছেলে সাহেদ স্কুলের শেষ দিকের ছাত্র থাকা অবস্থায় ঢাকায় চলে আসেন। তার মা সাফিয়া করিম এক সময় মহিলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে স্থানীয়দের ভাষ্য। ২০০৯ সালে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সাহেদ দুই বছরের মাথায় ধানমণ্ডিতে এমএলএম ব্যবসা শুরু করে বহু লোকের টাকা মেরে দেন বলে অভিযোগ আছে। পরে তিনি প্রভাবশালীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে প্রতিষ্ঠা করেন রিজেন্ট গ্রুপ। হাসপাতালে ছাড়াও কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, আবাসন, হোটেল ব্যবসা রয়েছে এ গ্রুপের।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত