
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৩:১১
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথাযথ উন্নতি না হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বের হাত বদল হওয়ার নানা অভিযোগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা।
বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম না কমায় ক্ষোভ জানিয়ে তারা বলেছেন, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাসদ কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিবির সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড ইকবাল কবির জাহিদসহ বাম জোটের অন্য নেতারা।
সভায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দলীয় নিয়োগের খবরে উদ্বেগ জানান বাম নেতারা। উপযুক্ত নীতিমালার ভিত্তিতে দলনিরপেক্ষ যোগ্য, দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগের আহ্বান জানান তারা।
সভায় এক প্রস্তাবে সীমান্তে ক্রমাগত হত্যাকাণ্ডে উদ্বেগ প্রকাশ করে তা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
বাম নেতারা সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুরে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। শ্রমিক অসন্তোষের সুযোগ নিয়ে কেউ যেন আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে সে বিষয়ে সরকারকে সতর্ক ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান তারা।
সভায় যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের ছেলে আমান আযমীর সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, জাতীয় সংগীত, মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বাম জোট নেতারা। তারা বলেন, আমান আযমী দেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতাকামী জনতার আত্মত্যাগকে অস্বীকার করেছেন যা চরম ঔদ্ধত্য ও ধৃষ্টতার সামিল।
সভার প্রস্তাবে বলা হয়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অস্বীকার করে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করা যাবে না। একাত্তরের আত্মদানকে অস্বীকার করা, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী পাক বাহিনীর দোসর রাজাকার-আলবদর বাহিনীর গণহত্যায় সমর্থন ও সহযোগিতাকারীদের ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার জন্যই যে আমান আযমীর এই বক্তব্য, তা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। জনগণ এই বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। বাম জোটও তার এহেন ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছে।
সভায় গাজায় নির্মম গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
সভায় দেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা ও নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের লক্ষ্যে আলোচনা শুরুর আহ্বান জানানো হয়।
সভায় জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি করা হয়।
আপনার মন্তব্য