সিলেটটুডে ডেস্ক

২১ আগস্ট, ২০১৯ ২১:৪৮

রাজনীতিতে পা দেওয়ার পর থেকে মৃত্যুর সামনাসামনি হয়েছি

২১ আগস্টের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'বিএনপি ও জামায়াতের মদদ ছাড়া ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা হতে পারে না। যেদিন থেকে রাজনীতিতে পা দিয়েছি সেদিন থেকে বারবার মৃত্যুর সামনা-সামনি হয়েছি। যেদিন থেকে বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া শুরু করেছি সেদিন থেকে বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছি। আর এই বাধা প্রতিহত করতে গিয়ে আমার নেতা-কর্মীরা প্রাণ দিয়েছে।'

বুধবার বিকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে ২১ আগস্টের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২১ আগস্টের আগে খালেদা জিয়া বক্তব্য ছিল- ‘আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা জীবনেও বিরোধীদলীয় নেতাও হতে পারবে না।’ কিন্তু আল্লাহর মাইর দুনিয়ার বাইর বলে একটা কথা আছে। মানুষ বোঝে না আল্লাহর শক্তি কত? যে অভিশাপ খালেদা জিয়া আমার জন্য দিয়েছিল এখন তা তার কপালেই জুটে গেছে; এটা হলো বাস্তবতা।

শেখ হাসিনা বলেন, তদন্ত করা হয়েছে। যারা আসামি তারা শাস্তি পেয়েছে। ২১ আগস্টের ঘটনায় খালেদা জিয়ার সহযোগিতা থাকলেও তাকে আসামি করা হয়নি। সে তো প্রধানমন্ত্রী ছিল-তার সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব ছিল। এটা অস্বীকার করা যায় না। কারণ খালেদা জিয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিল। আর বাবর কিন্তু স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিল। সে ক্ষেত্রের তার দায়িত্ব তো অস্বীকার কেউ করতে পারে না।

শেখ হাসিনা বলেন, ২১ আগস্টের ঘটনার পরে খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে সব নেতা কর্মীদের একই সুর যে আওয়ামী লীগ নিজেরাই গ্রেনেড মেরেছে। আমরা নিজেরা মেরেছি বলতে আমরা নিজেরাই আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলাম। কবে গ্রেনেড মারায় এক্সপার্ট হলাম?- সেটা তো জানি না। এতগুলো গ্রেনেড হাতে করে নিয়ে যাওয়া তো সহজ কথা নয়। সেখানে অনেক টেলিভিশন ছিল রেকর্ড করার সরঞ্জামাদি ছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা কেন সেদিন র‌্যালি করতে গিয়েছিলাম। আপনাদের মনে আছে যে, সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর হযরত শাহজালালের দরগায় গ্রেনেড হামলা হয়। আর সেই সময় গোপালগঞ্জে আমাদের ছাত্রলীগের এক নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং এরকম অগণিত নেতা-কর্মীর ওপর প্রতিনিয়ত হামলা হয়, আর তাদের হত্যা করা হয়। এসব সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে এবং ওই গ্রেনেড হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা শান্তির মিছিল করতে চেয়েছিলাম এবং একটি র‌্যালি করতে চেয়েছিলাম।'

তিনি বলেন, 'আমরা যে জায়গায় মিছিলটা করতে চেয়েছিলাম সে জায়গায় আমাদের অনুমতি দেয়নি। পরে মাইকিং করে আমারা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনেই ব্যবস্থা নেই। এরপর ২০ আগস্ট রাত ১২টার দিকে একটা অনুমতির চিঠি পাঠানো হয় আওয়ামী লীগ অফিসে। সেই চিঠিটা তখন কে খুলবে আর কে দেখবে আর কে ব্যবস্থা নেবে। এটা ছিল তাদের একটা চাল। পরে আমরা যেখানে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম সেখানেই সমাবেশ করেছি। আমাদের ভলান্টিয়ার এবং নেতা-কর্মীদের সেদিন কাউকে পাশের ছাদে উঠতে দেয়নি। সেদিন কোনো পুলিশও আমাদের নেতা-কর্মীদের সমাবেশে যেতে বাধা দেয়নি।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'যখন আমি সেখানে গেলাম, বক্তব্য দিয়ে শেষ করলাম সেসময় ফটোগ্রাফার গোর্কি এসে বললো- আপা আমি ছবি নিতে পারিনি। যেহেতু গোর্কির বাবাকে আমি চিনতাম সেহেতু ছবি তুলতে রাজি হলাম। তখন ছবি তুলতে গিয়েই কয়েক সেকেন্ড দাঁড়ানো। এরই মধ্যে গ্রেনেড হামলা শুরু হয়ে গেল।'

তখনকার পরিস্থিতি বর্ণনা করে তিনি বলেন, 'সাথে সাথে অমার সঙ্গে যারা ছিল তারা আমাকে টেনে বসিয়ে দিলো। তারপর একটার পর একটা গ্রেনেড বিস্ফোরিত হচ্ছে। তখন গ্রেনেডের স্প্লিন্টার এসে হানিফ ভাইয়ের গাঁয়ে লাগছে আর তার রক্ত আমার ওপর গড়িয়ে পড়ছে। তারপর আবার একটার পর একটা গ্রেনেড মারতেই থাকে।'

আগস্ট মাস এলেই যেন অশনি সংকেত বয়ে নিয়ে আসে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগস্ট মাস এলেই যেন অশনি সংকেত নিয়ে আসে। বারবার হামলা হয়েছে। বারবার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাকে ঢাল হিসেবে রক্ষা করেছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত