সিলেটটুডে ডেস্ক

২৩ নভেম্বর, ২০১৯ ২২:০৩

ভাঙল রবের জাসদ

আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি এবার ভাঙনের কবলে পড়ল। সভাপতি রবের ডাকা কাউন্সিল বর্জন করে আগামী ১১ জানুয়ারি আলাদা সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন।

রব আগামী ২৮ ডিসেম্বর জেএসডির জাতীয় কাউন্সিল আহ্বান করেছেন। তা বর্জন করে শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আলাদা সম্মেলনের ঘোষণা দেন তিনি। রব তার দল নিয়ে বর্তমানে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে রয়েছেন, তা নিয়ে আপত্তি তুলেছে অন্য পক্ষ।

আবদুল মালেক রতন বলেন, জেএসডির নেতৃত্বে একাংশ আজকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, চেতনা, দলের অংশীদারিত্বের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার রাজনীতি এবং রাজনীতি আপদ-বিপদ হিসেবে পরিচিত শক্তির বিরুদ্ধে তৃতীয় শক্তি গড়ে তোলার অঙ্গীকার ভুলে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী দল ও গোষ্ঠির সাথে আতাঁত গড়ে তুলেছে। ওই অংশটি ২৮ ডিসেম্বর যে কাউন্সিলে আহবান করেছে তা দলীয় বিধি সম্মত নয় বলে আমরা মনে করি। এজন্যই আমরা অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ কাউন্সিল বর্জন করে ১১ জানুয়ারি কনভেনশনের মাধ্যমে দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র সুনিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

রতন বলেন, আমরাই মূল জেএসডি। ওরা মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের সাথে হাত মিলিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জেএসডির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউল করীম ফারুক। লিখিত বক্তব্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দিকে ইঙ্গিত করে বলা হয়, প্রথমে একে(জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) নির্বাচনী ঐক্য বা সমঝোতা বলা হলেও নির্বাচনের পর একে ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর করা হচ্ছে আঙ্গুল কেটে রক্ত শপথের মধ্য দিয়ে। তারা দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা বাদ দিয়ে ব্যক্তিতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র ও কোটারিতন্ত্রের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। গণতন্ত্রবিহীন কাউন্সিল করে ব্যক্তির ইচ্ছামতো নেতৃত্ব নির্ধারণ, উপজেলা, জেলা, মহানগর ও কেন্দ্রীয় কমিটি করার দিকে এগুচ্ছে। গঠনতন্ত্র, নিয়ম-নীতিবিহীন অগণতান্ত্রিক ও ব্যক্তির ইচ্ছানির্ভর অবৈধ কাউন্সিল দলের ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা-কর্মী মেনে নেয়নি। তারা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে।

সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম এ গোফরানসহ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

এক সময়ের ছাত্রলীগ নেতা ও ডাকসুর ভিপি রব স্বাধীনতার পর জাসদ গড়ে তোলায় সম্পৃক্ত হন। এরপর জাসদ কয়েক ভাগে ভাগ হলে এক ভাগের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে জাসদের সক্রিয় দুটি অংশ এক হলে সভাপতি হন রব, সাধারণ সম্পাদক হন হাসানুল হক ইনু। তখন শেখ হাসিনার সরকারে মন্ত্রীও হন তিনি। পরে আবার আলাদা হয়ে যান রব ও ইনু। নির্বাচন কমিশন ইনুর জাসদকে মশাল প্রতীক দেওয়ার পর রব তার জাসদকে জেএসডি নামে নিবন্ধিত করার ইসিতে।

গত বছর নির্বাচনের আগে আকস্মিকভাবে বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে কামাল হোসেনকে সামনে রেখে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে সক্রিয় হন রব। জাসদে প্রতিটি ভাঙনের সময় যাবে রবের পাশে ছিলেন আবদুল মালেক রতন। এবার তিনি রবকে ছাড়তে যাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, একাদশ সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লার দেবীদ্বার আসন থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে মালেক রতন নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত