সিলেটটুডে ডেস্ক

১৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০১:৪৫

আওয়ামী লীগের সম্মেলন: সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় এক ডজন নেতা

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে একধরনের টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। এ পদে সম্ভাব্য দু-একজন প্রার্থীকে নিয়ে নানা সমালোচনাও চলছে। আবার কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থীর ছবি দিয়ে পোস্টার ছাপানোয় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে। এ অবস্থায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কারও ছবি দিয়ে সম্মেলনকেন্দ্রিক পোস্টার-ফেস্টুন সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আগামীকাল শুক্রবার ও শনিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন ঘিরে প্রধান আলোচনার বিষয়- কে হচ্ছেন পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্বপদে থাকছেন নাকি নতুন মুখ আসছেন। এ অবস্থায় ওবায়দুল কাদেরের সম্ভাবনা নিয়ে গুঞ্জন থাকলেও এই পদে কমপক্ষে ১২ জন কেন্দ্রীয় নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হচ্ছেন- দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান।

আলোচিত এই নেতাদের মধ্যে দু'জনের ছবি দিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পোস্টার ও ফেস্টুন ঝোলানো হয়েছে। এ নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াও দেখা দিয়েছে। বুধবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভায় তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহাম্মদ মন্নাফি ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের কাছে কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা জানতে চান- তাদের নামে কীভাবে একজন নেতার ছবি দিয়ে পোস্টার ছাপানো হলো?

এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো নেতার ছবির সঙ্গে অন্যের ছবি দিয়ে পোস্টার টাঙানো যাবে না। আজকের (বুধবার) মধ্যেই ওই সব ছবি সরিয়ে ফেলতে হবে। তিনি আরও বলেন, সবাই বড় হতে চান। আর এটাই স্বাভাবিক। নেতা হওয়ার প্রতিযোগিতা অবশ্যই থাকবে। তবে নেতা হওয়ার জন্য একজন আরেকজনের সমালোচনা করাটা নোংরামি। ওবায়দুল কাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করা হবে বলেও জানান।

ছবিসহ পোস্টার ছাপানো প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির জানান, অতি উৎসাহ দেখিয়ে একজন নেতার ছবি দিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ব্যানারে পোস্টার ছাপানো হয়েছে। কিন্তু কে কিংবা কারা এমন পোস্টার ছাপিয়েছে, তা জানা নেই। ঠিক একই ভাবে শাহবাগ এলাকায় আরেকজন নেতার ছবি দিয়ে পোস্টার টাঙানো হয়েছে। সেই ছবিও কে ছাপিয়েছে, তাও বলা যাচ্ছে না।

এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে একধরনের টানাপোড়েন দেখা যাচ্ছে। তারা প্রায় প্রতিদিনই প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয় সম্মেলনের সার্বিক কার্যক্রম দেখভাল করছেন। একই সঙ্গে কেউ কেউ পারস্পরিক সমালোচনায় জড়িয়ে যাচ্ছেন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সম্মেলন কার্যক্রম চলাকালেও এমন চিত্র দেখা গেছে। এ বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিতেও আনা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা বলেছেন, সাধারণত জাতীয় সম্মেলনের তিন-চার দিন আগে থেকেই দলের সাধারণ সম্পাদক পদে কে আসছেন তা জানা যেত। কিন্তু এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। নানা আলোচনায় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সম্ভাবনার কথা বলা হলেও কেউই তা নিশ্চিত করতে পারছেন না। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠজনরাও এবার চুপচাপ আছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মঙ্গলবার তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে মর্মাহত হয়ে আছেন। মূলত এ কারণেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে কে আসছেন, তার কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত