শাকিলা ববি

২০ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:২০

আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে সিলেটের চার নেতা

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় কমিটির সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ (শুক্রবার)। এই সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে আছেন দলটির সকল নেতাকর্মী। কারা আসছেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে এই নিয়েও চলছে জল্পনা কল্পনা। সিলেটের চার নেতারও চোখ কেন্দ্রীয় সম্মেলনে।

এই চার নেতার দু'জন কেন্দ্রীয় কমিটিতে রয়েছেন। তারা এবার পদোন্নোতি চান। আর আরও দুই নেতার প্রত্যাশা কেন্দ্রীয় কমিটিতে অর্ন্তভূক্তির।

এদের মধ্যে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আছেন। আর বদরউদ্দিন আহমদ কামরান রয়েছেন সদস্য হিসেবে। অপর দুই নেতা শফিকুর রহমান চৌধুরী ও আসাদ উদ্দিন আহমদ সদ্য সিলেট জেলা ও মহানগরের সদস্য পদ হারিয়েছেন। তারা এবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে মূল্যায়িত হতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে নেতাকর্মীদের মধ্যে।

সম্মেলন উপলক্ষ্যে এই চার নেতাই এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। কেন্দ্রের পদ পেতে দলের হাইকমান্ডের নজর কাড়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে এবার বড় ধরণের রদবদল হতে পারে বলে আলোচনা শোনা যাচ্ছে। এমন আলোচনা আরও আশান্বিত করেছে সিলেটের এই নেতাদের।

প্রায় তিন দশক সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। গত ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিন দশক পর পদ হারান কামরান। সাবেক মেয়রকে সরিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগে আসেন নতুন সভাপতি। মহানগরের পদ হারালেও এখনও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদে রয়েছেন কামরান। এবারের সম্মেলনে কামরান পদোন্নোতি পেতে পারেন বলে তার অনুসারীরা জানিয়েছেন। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আলোচিত হচ্ছে কামরানের নাম।

টানা তিন মেয়াদে এইপদে রয়েছেন সিলেটের আরেক নেতা মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। সিরাজ অনুসারী মনে করেন, নতুন কমিটিতে পদোন্নোতি পেতে পারেন তিনি। এক্ষেত্রে তাকে যুগ্ন সম্পাদক করা হতে পারে বলে ধারণা তাদের। মিসবাহ আগের অবস্থানে থাকতে পারেন এমনটি জানিয়েছেন অনেকে।

গত আট বছর ধরে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শফিকুর রহমান চৌধুরী। কর্মীবান্ধব হিসেবে পরিচিত এই নেতা এবারও জেলার শীর্ষ পদে থাকছেন এমনটিই ধারণা করেছিলেন সবাই। তবে সবাইকে অবাক করিয়ে দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয় শফিককে। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা আসাদ উদ্দিন আহমদকে সরানোতেও অবাক হয়েছেন অনেকে। এই দুই নেতাকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে মূল্যায়িত করা হবে এমন আশা তাদের অনুসারীদের।

বদর উদ্দিন আহমদ কামরান মহানগরের সভাপতি পদ হারালেও সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখনও তিনি সরব। কেন্দ্রীয় সদস্য থাকায় তিনি আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণও করছেন।

বিতর্কমুক্ত রাজনীতিবিদ হওয়ায় সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীর পরিচিতি রয়েছে সারা সিলেট বিভাগে। লন্ডনের জীবন ছেড়ে সিলেটে আসেন শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার জন্য। দেশে ফিরেই বিএনপির তৎকালীন এমপি ইলিয়াস আলীকে পরাজিত করে তিনি সিলেট-২ আসন পুনরুদ্ধার করেন।

পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ। ২০১১ সালে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়গা করে নেন তিনি।

মিসবাহ কামরান ছাড়াও আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটিতে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে আছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি এবার পদ হারাতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে বলেন, আওয়ামী লীগ একটি প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন। তাই এই দলের সব কিছু নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনা বেশি থাকে। তাছাড়া এটি একটি ঐতিহাসিক সম্মেলন। তাই এর সাথে জড়িয়েছে আছে নেতা কর্মীদের আনন্দ আবেগ অনুভূতি। সম্মেলনের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। আশা করি সুন্দরভাবে সম্মেলন সম্পন্ন হবে।

আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে তিনি বলেন, আমি বর্তমান কমিটিতে আছি। সামনের কমিটিতে থাকবো কিনা জানি না। আর সবার মত আমার অনুসারী ও নেতাকর্মী যারা আছেন তাদের আমাকে নিয়ে প্রত্যাশা আছে। আমি মনে করি নবীন প্রবীণের সমন্বয়েই আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত