সিলেটটুডে ডেস্ক:

০২ নভেম্বর, ২০২১ ১৯:৪৪

বড় হারে বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশের বিদায়

ছবি: বিসিবি

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও হারলো বাংলাদেশ। এ নিয়ে বিশ্বকাপের টানা ৪ ম্যাচেই হারলো মাহমুদউল্লাহর দল। শুরুতে নেমে ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর মাত্র ৮৪ রানে অলআউট হয়ে টাইগাররা। জবাবে ৩৯ বল বাকি থাকতেই সহজ জয় তুলে নেয় প্রোটিয়ারা। এই হারে আনুষ্ঠানিকভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ থেকে বিদায় নিল বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার নিয়মরক্ষার ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের দেয়া ৮৫ রানের মামুলি টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের শুরুটাও ভালো হতে দেননি তাসকিন। প্রথম ওভারেই তুলে নেন রেজা হ্যানড্রিকসের উইকেট। ব্যক্তিগত ৪ রানে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন তিনি। পঞ্চম ওভারে মেহেদীর বলে টানা দুই চার হাঁকানোর পর আউট হন কুইন্টন ডি কক। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ রান। কম পুঁজি নিয়েও লড়াই চালায় বাংলাদেশের বোলাররা। পাওয়ারপ্লের শেষ বলে মারক্রামকে ফেরান তাসকিন।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে অধিনায়ক টেম্বা বামুভাকে নিয়ে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যান ভ্যান ডার ডুসেন। তবে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারেননি তিনি। ব্যক্তিগত ২২ রানে নাসুম আহমেদের বলে শরিফুলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ডুসেন। এদিকে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন বাভুমা। অপরাজিত থাকেন ৩১ রানে। আর ৫ রানে অপরাজিত থাকেন ডেভিড মিলার।

এর আগে সেমিফাইনালের দৌঁড় থেকে ছিটকে গেলেও জয়ের ধারায় ফিরতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু টস হেরে হতশ্রী ব্যাটিংয়ে প্রোটিয়া বোলারদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে মাত্র ৮৪ রানেঅ গুটিয়ে যায় টাইগার ব্যাটাররা। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই নড়বড়ে নাঈম। চতুর্থ ওভারে রাবাদার বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হেন্ডরিকসের তালুবন্দী হন তিনি। ১১ বলে ৯ রান তুলেন এই ওপেনার। এর পরের বলেই সৌম্যকে হারায় বাংলাদেশ। রাবাদার আবেদনে শুরুতে আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওর্থ সাড়া দেননি। পরে বাভুমার রিভিওতে শূন্যরানেই এলবিডব্লিউতে ফেরেন সৌম্য।

ষষ্ঠ ওভারে বল করতে এসে হ্যাটট্রিক করতে না পারলেও ওভারের শেষ বলে মুশফিককে ফেরান রাবাদা। ৩ বল খেলে শূন্যরানে আউট হন মুশফিকুর রহিম। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে রাবাদার তোপে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। প্রথম ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৮ রান বাংলাদেশের।

৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন বিপদে তখন দলের বিপদ আরো বাড়িয়ে দেন দলপতি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। নর্টজের বাউন্সার তার গ্লাভস ছুঁয়ে ধরা পড়ে মারক্রামের হাতে। আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দিলে রিভিও নেন অধিনায়ক। রিভিওতে সফল না হওয়ায় ৩ রানেই ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয়েছে মাহমুদউল্লাহকে।

পরের ওভারের প্রথম বলে ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন আফিফ হোসেন(০)। বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে লিটন দাস যা একটু হাল ধরেছিল। শামসির ছোবল থেকে সেও রক্ষা পায় নি। এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরার আগে ৩৬ বলে ২৪ রান করেন লিটন। তার আউটে চাপ আরো বেড়ে যায় বাংলাদেশের।

দলীয় ৬৪ রানে শামসির স্পিনে ক্যাচ আউট হন শামীম। যুব বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটার বিশ্বকাপের অভিষেক স্মরণীয় করতে পারলেন না। ২০ বল খেলে কোন বাউন্ডারি না মেরে ১১ রানেই ফিরলেন মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবে নাম কুড়ানো এই ক্রিকেটার।

পুরো দলের মধ্যে বলার মত টি-টোয়েন্টিসুলভ ব্যাটিং করেন মেহেদী হাসান। ইনিংসের একমাত্র ছক্কাও এসেছে তার ব্যাট থেকে। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে নর্টজের বলে ফেরেন তিনি। ২৫ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় আউট হবার আগে মেহেদী নিজের ঝুলিতে তুলে ২৭ রান। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে নামেন শরীফুল, তাকে খেলারই সুযোগ দেননি নাসুম। হিট উইকেটে আউট হয়ে শরীফুলকে রেখেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।

সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার কাছে ৫ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। এরপর ইংল্যান্ডের কাছে হারে ৮ উইকেটে। তবে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে জয়ের কাছে গিয়েও ৩ রানে হার। আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরে হারের হালি পূর্ণ করলো বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ একাদশ:

লিটন দাস, মোহাম্মদ নাঈম, শামীম হোসেন, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত