নিজস্ব প্রতিবেদক:

০৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:৫৪

বাংলাদেশের জয়ের নায়ক ইবাদতের এলাকায় আনন্দের বন্যা

ইবাদতের মা-বাবাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা

ইবাদত হোসেন চৌধুরী। নিউজিল্যান্ডের কঠিন কন্ডিশনে বাংলাদেশকে ঐতিহাসিক জয় এনে দেওয়ার নায়ক। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এর আগে সব সংস্করণ মিলিয়ে টানা ৩২ হারের ধারারও অবসান ঘটে বাংলাদেশের। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সেরা জয় পায় বাংলাদেশ।

দুই ইনিংসে ৭ উইকেট (১ ও ৬) নিয়ে দলকে জেতাতে বড় ভূমিকা রাখা ইবাদত ম্যাচসেরার পুরস্কারও জিতেছেন। ইবাদতের এমন অর্জনে এবং বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ে পরিবারের পাশাপাশি এলাকায় (গ্রামের বাড়ি) এখন আনন্দের বন্যা বইছে।

ইবাদতের গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির কাঠালতলী গ্রামে।

বুধবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিন ইবাদত হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেলো আনন্দোৎসব। মহাখুশি পরিবারের সবাই।

ইবাদতের হোসেন চৌধুরী স্বপ্ন ছিল একদিন জাতীয় দলের হয়ে ক্রিকেটে খেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবেন। সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। তিনি দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।

আলাপকালে ইবাদতের বাবা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী ও মা সামিয়া বেগম চৌধুরী বলেন, 'লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই খেলার প্রতি তার আলাদা টান ছিল। সারাদিন ক্রিকেট খেলত। স্বপ্ন ছিল একদিন জাতীয় দলের হয়ে খেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। আজ আমার ছেলে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশকে জিতিয়ে সে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। ওর এমন পারফরমেন্সে আমরাও খুশি। এলাকার মানুষও খুশি।'

তারা আরও বলেন, 'আমরা তার সব খেলা দেখেছি। নামাজ পড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য দোয়া করেছি। সকালে এবাদতের সঙ্গে আমাদের মুঠোফোনে কথা হয়েছে। সে খুব খুশি।'

ইবাদতের চাচাতো ভাই দেলওয়ার হোসেন চৌধুরী ইমন বলেন, 'নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ে গোটা বাংলাদেশের মতো আমরাও গর্বিত, আনন্দিত। এবাদত ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি অনুরাগী। আমাদের বিশ্বাস ছিল সে একদিন দেশের মুখ আলোকিত করবে। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে এবাদত।'

ইবাদতের সহপাঠী ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার আমজাদ হোসেন পাপলু বলেন, 'নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সে যে চমক দেখিয়েছে তাতে আমরা খুশি। এলাকার মানুষ ভীষণ খুশি। তার জন্য আজ বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ টেস্ট ম্যাচে জয় পেয়েছে। এলাকার সবাই তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।'

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ইবাদত হোসেন চৌধুরীর বাবা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বর্ডার গার্ডে (বিজিবি) চাকরি করতেন। আর মা সামিয়া বেগম চৌধুরী পেশায় গৃহিনী। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে এবাদত দ্বিতীয়। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার প্রতি তার আলাদা টান ছিল। স্থানীয় বিভিন্ন ক্রিকেট ক্লাবে খেলেছেন ইবাদত। ভালো বোলিং করতেন বলে এলাকার বাইরেও তার নামডাক ছড়িয়ে পড়ে।

এসএসসি পাশ করে ২০০৮ সালে সৈনিক পদে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগ দেন ইবাদত। চাকরির পাশাপাশি বিমান বাহিনীর দলে নিয়মিত ভলিবল খেলতে শুরু করেন। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি তার টান মোটেও কমেনি। ২০১৬ সালে রবি পেসার হান্টের শেষ রাউন্ডে ১৩৯.০৯ কিলোমিটার গতিতে বল করে সবাইকে চমকে দেন ইবাদত। এরপর থেকে তাকে আর পেছনে থাকাতে হয়নি। ২০১৯ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইবাদতের অভিষেক হয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই তার টেস্টে অভিষেক হয়।

এদিকে বুধবার রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে তার নিজ এলাকায় আনন্দ মিছিল হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত