স্পোর্টস ডেস্ক

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৭:৪১

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেটে বাংলাদেশের হার

অধিনায়কত্বের প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে এক প্রান্তে একাই লড়লেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু সতীর্থদের কাছ থেকে পেলেন না পর্যাপ্ত কোনো সহায়তা। কোনো ব্যাটারই দিতে পারলেন না সঙ্গ। তাতে সাদামাটা পুঁজি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাংলাদেশকে। সে লক্ষ্য তাড়ায় খুব একটা বেগ পেটে হয়নি কিউইদের। উইল ইয়ংয়ের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সহজ জয়ে সিরিজ জিতে নিল নিউজিল্যান্ড।

মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে কিউইরা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩৪.৩ ওভার ব্যাট করে ১৭১ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। জবাবে ৯১ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছায় সফরকারী দলটি।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালোই করে নিউজিল্যান্ড। দেখে শুনেই এগিয়ে যেতে থাকেন দুই ওপেনার ফিন অ্যালেন ও উইল ইয়ং। ৪৯ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। তবে দশম ওভারে বল করতে এসে এ জুটি ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। তার শর্ট বলে পুল করেছিলেন ফিন অ্যালেন। তবে অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে টেনে খেলতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ২৬ বলে ২৮ রান করেন অ্যালেন।

অসাধারণ ডেলিভারিতে পরের বলেই ডিন ফক্সক্রাফটকে তুলে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা তৈরি করেন শরিফুল। তার ফুললেন্থ বলে বোল্ড হয়ে যান এ ব্যাটার। তুলে নিতে পারতেন হ্যাটট্রিকও। পরের বলটিও দুর্দান্ত করেছিলেন শরিফুল। হেনরি নিকোলসের আউটসাইড এজের আবেদন জোরালো আবেদন ছিল। তবে আম্পায়ার সাড়া দেননি। নিশ্চিত না হওয়ায় রিভিউ নেননি টাইগাররা।

এরপর বাংলাদেশের হতাশা বাড়াতে থাকেন ইয়ং ও নিকোলস। তৃতীয় উইকেটে ৮১ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। তাতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় দলটি। এরপর দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ইয়ংকে ফিরিয়ে এ জুটি ভেঙেছিলেন নাসুম। তার ভেতরে ঢোকা বলটি বাঁক খেয়ে অফ স্টাম্প ভাঙলে ব্যক্তিগত ৭০ রানে থামেন ইয়াং। ৮০ বলে ১০টি চার ও ১টি ছক্কায় সাজান তার ইনিংস।

এরপর বাকি কাজ টম ব্লান্ডেলকে নিয়ে শেষ করেন নিকোলস। এক প্রান্তে আগলে ৮৬ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তবে উইকেটে নেমে কিছুটা আগ্রাসী হয়ে ১৬ বলে ২৩ রান তুলে দলের জয় নিশ্চিত করেন ব্লান্ডেল।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ দলে লড়াইটা কেবল একাই করেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সতীর্থরা কেউই সঙ্গ দিতে পারেননি। ফলে ১৫ ওভার বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় টাইগাররা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন শান্ত। ৮৪ বলে ১০টি চারের সাহায্যে এই রান করেন তিনি।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই বিদায় নেন অভিষিক্ত জাকির হাসান (১)। মিলনের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে বোল্ড হন বাঁহাতি ব্যাটার। আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমও (৫) বিদায় নেন পরের ওভারে। বোল্টের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন এই তরুণ।

দলীয় ৮ রানে ২ উইকেট হারানোর পর হৃদয়কে নিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টায় ছিলেন শান্ত। অধিনায়ক টিকলেও হৃদয় অসময়ে নেন বিদায়। মিলনের বলে কাভারে ক্যাচ দিয়ে থামেন ১৭ বলে ৩ চারে ১৮ করা হৃদয়। ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম।

চতুর্থ উইকেটে দুজনের জুটিতে আসে ৫৯ বলে ৫৩ রান। লকি ফার্গুসনের গতিতে পরাস্ত হয়ে প্লেইড হন হয়ে যান মুশফিক (১৮)। এরপর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গেও জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন শান্ত। জুটিটা জমে উঠতে বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহও। মিলনে গতি আর স্যুয়িং বুঝতে না পেরে ২১ রান করা ব্যাটার ক্যাচ দেন কিপারের হাতে।

শেখ মেহেদী হাসানও (১৩) বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি শান্তকে। এক পাশে উইকেট পতনের স্রোতেও কুঁকড়ে না থেকে রান বাড়িয়ে যান শান্ত। ৫৫ বলে ফিফটি করার পর সেঞ্চুরির আভাসও দিচ্ছিলেন। তবে টেল এন্ডারদের নিয়ে লড়াই আর করতে পারেননি। অফ স্পিনার কোল ম্যাকনকির বলে এলবিডব্ললিউতে শেষ হয় তার ইনিংস।

৩৪ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়ে কিউইদের সফল বোলার অ্যাডাম মিলনে। ট্রেন্ট বোল্ট ৩৩ রানের বিনিময়ে পান পান ২টি উইকেট। ২টি শিকার ম্যাককঙ্কিরও।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত