স্পোর্টস ডেস্ক

২৬ অক্টোবর, ২০২৩ ১৪:০৪

ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপে টিকে থাকার লড়াই

বিশ্বকাপে ছন্দহীন ইংল্যান্ড। ব্যাটে-বলে টালমাটাল অবস্থা জো রুট, বাটলার, বেয়ারস্টোদের। একই বৃত্তে অবস্থান শ্রীলঙ্কারও। ভারত বিশ্বকাপে নিজেদের হারিয়ে খুঁজছেন লঙ্কানরা। ইতোমধ্যে ৪টি করে ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে দুদলের। তাতে জয় মাত্র এক ম্যাচে। বাকি তিন ম্যাচেই হার জুটেছে। পয়েন্ট টেবিলেও দুদলের অবস্থান পাশাপাশি।

শ্রীলঙ্কা ৮ নম্বরে; ঠিক পরের অবস্থানে ইংল্যান্ড। এমতাবস্থায় দুটি দল আজ পরস্পরের বিপক্ষে মাঠে নামবে। বেঙ্গালুরু এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে ম্যাচটি। বিশ্বকাপে টিকে থাকতে হলে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই দল দুটির।

বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ভারতে পা রাখার আগে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ-টুর্নামেন্টগুলোতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে এসেছে তারা। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতেও বরাবরই দাপুটে পারফরম্যান্স ইংলিশ ব্যাটার-বোলারদের। অথচ সেই দলটিই কি না ভারত বিশ্বকাপে, বলতে গেলে বাটলার, রুটদের পরিচিত কন্ডিশনে যাচ্ছে-তাই খেলছে। বিশ্বকাপের আগে যাদের পক্ষে বাজির দর ছিল শতভাগ। এখন তারাই সবার আগে বাদ পড়ার শঙ্কাতে! বেঙ্গালুরুতে লঙ্কানদের বিরুদ্ধে হেরে গেলে টেবিলের তলানিতে চলে যাবে ইংলিশরা।

চিন্নাস্বামীর উইকেট হচ্ছে রানপ্রসবা। অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান ম্যাচে এই মাঠে দুই দলই তিন শ প্লাস রান করেছে। ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা ম্যাচেও বড় স্কোরের প্রত্যাশা করছেন সবাই। টিকে থাকার ম্যাচে ব্যক্তিগত কিছু অর্জনের সামনে দাঁড়িয়ে ইংল্যান্ড। অধিনায়ক জস বাটলার আর ৯০ রান করলেই ৫ হাজারি রানের ক্লাবে প্রবেশ করবেন। পঞ্চম ইংলিশ ব্যাটার হিসেবে এ কীর্তি গড়ার অপেক্ষায়। রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন জো রুটও। আর মাত্র ৭০ রান করলে বিশ্বকাপে (অংশ নেয়া আগের আসরসহ) ব্যক্তিগত এক হাজার রানের গর্বিত মালিক হবেন। ব্যক্তিগত অর্জনের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন শ্রীলঙ্কার মহেশ থিকসানাও। ৪ উইকেট শিকার করলে ওয়ানডেতে ৫০ উইকেট শিকারের ঘর ঢুকে যাবেন এ স্পিনার।

রঙিন পোশাকের ওয়ানডেতে ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কার লড়াইটা বেশ পুরোনো। সেই ১৯৮২ সাল থেকে শুরু। ২০২৩ সাল পর্যন্ত দুদল মোট ৭৮টি ম্যাচ খেলেছে। তাতে ইংল্যান্ডের ৩৮ জয়ের বিপরীতে, লঙ্কানদের জয় ৩৬টিতে। ১টি ম্যাচ হয়েছে টাই। প্রায় সমানে সমান অবস্থায় থাকা দল দুটি আজ নিজেদের ৭৯তম ম্যাচ খেলতে নামবে। বিশ্বকাপের সব আসর মিলে এখন পর্যন্ত ১১ বার মুখোমুখি হয়েছে ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা। তাতে ইংলিশদের ৬ জয়ের বিপরীতে লঙ্কানদের জয় ৫ ম্যাচে। এখানেও জয়-পরাজয়ের হিসাবটা প্রায় সমান।

বিশ্বকাপে ম্যাচ জয়ের দিক থেকে ইংলিশরা এগিয়ে থাকলেও একটা রেকর্ড কিন্তু পক্ষে কথা বলছে লঙ্কানদের। এই শতকে অনুষ্ঠিত হওয়া ২০০৭, ২০১১, ২০১৫ এবং সবশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপে ইংলিশদের বিরুদ্ধে অপরাজেয় দল শ্রীলঙ্কা। একমাত্র ২০০৩ বিশ্বকাপে দুই দলের সাক্ষাৎ হয়নি। সবশেষ চারটি বিশ্বকাপেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হার জুটেছে ইংলিশদের। এর আগের ইতিহাসে এবার চোখ রাখা যাক। অর্থাৎ গত শতকে কোন বিশ্বকাপে কে-কাকে হারাল সেই হিসাবটা তুলে ধরা যাক।

দুই দল প্রথমবার মুখোমুখি হয় ১৯৮৩ বিশ্বকাপে। ওই বিশ্বকাপে দুবার মাঠে নেমে দু’বারই জয়ী দলের নাম ইংল্যান্ড। একই অবস্থা পরের বিশ্বকাপে অর্থাৎ ১৯৮৭ বিশ্বকাপেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুবার নেমে দুবারই পরাজিত হয় শ্রীলঙ্কা। এরপর ১৯৯২ ও ১৯৯৯ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কাকে হারলেও মাঝে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে লঙ্কানদের বিরুদ্ধে পরাজিত হয় ইংলিশরা। ২০২৩ বিশ্বকাপে কেমন করে দুদল সেটাই দেখার। এই ম্যাচ জিতলে একবিংশ শতকে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে প্রথমবার জয়ের মুখ দেখবে ইংল্যান্ড। হেরে গেল লঙ্কানদের রেকর্ডটা অক্ষুণ্ন থাকবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত