স্পোর্টস ডেস্ক

১৫ জানুয়ারি, ২০১৬ ২২:১৭

গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমিতে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের সেমিফাইনালের সম্ভাবনা নিয়ে যে সমীকরণ ছিল তা মুছে গিয়েছিল ম্যাচ শুরুর আগেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়া শ্রীলঙ্কার জয়ের মাধ্যমে। আর নেপালের সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ে ‘এ’ গ্রুপের সেরাও হলো মারুফুল হকের দল।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) প্রথম ম্যাচে মালয়েশিয়াকে শ্রীলঙ্কা হারানোয় বাংলাদেশ ও নেপাল পেয়ে যায় সেরা চারে খেলার টিকেট। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচটি ছিল তাই গ্রুপ সেরা হয়ে সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াই। তিন ম্যাচে সমান পাঁচ করে পয়েন্ট নিয়ে গোল পার্থক্যে এগিয়ে থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলো মামুনুলরা; রানার্সআপ নেপাল।

ফরোয়ার্ড জাহিদ হাসান এমিলি ও মিডফিল্ডার জাহিদ হোসেনকে ছাড়া খেলতে নামা বাংলাদেশ শুরু থেকে ছিল আক্রমণাত্মক। গোলের একাধিক সুযোগও তৈরি করে স্বাগতিকরা। কিন্তু শাখাওয়াত হোসেন রনি, হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসদের ভুলে তা কাজে লাগানো যায়নি।

দ্বাদশ মিনিটেই প্রথমার্ধে এগিয়ে যাওয়ার সেরা সুযোগটি নষ্ট করেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই গোল করা রনি। বল পায়ে দ্রুত বক্সে ঢুকে নেপাল গোলরক্ষকের গায়ে শট নেন শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের এই ফরোয়ার্ড। ম্যাচের বাকিটা সময়েও ব্যর্থতা পিছু ছাড়েনি রনির।

২২তম মিনিটে স্বাগতিকদের আরেকটি সুযোগ নষ্ট হয় হেমন্তের ভুলে। বক্সের মধ্যে ফাঁকায় থাকা রনিকে বল না বাড়িয়ে এই মিডফিল্ডার নিজেই শট নেন। দুর্বল শট গ্লাভসবন্দি করতে কোনো সমস্যাই হয়নি বিকাশ কুথুর। এক মিনিট পর বাংলাদেশ অধিনায়ক মামুনুল ইসলামের কর্নারও ফিস্ট করে ফেরান অতিথি দলের এই গোলরক্ষক।

বক্সের জটলার মধ্যে জামাল ভূইয়ার শট নাবীব নেওয়াজ জীবনের পায়ে লেগে দিক বদলে নেপালের পোস্টের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে গেলে গোলশূন্যভাবে শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।

দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতে গুছিয়ে ওঠা নেপাল আক্রমণে যায়। ৫৭তম মিনিটে ডান দিক থেকে হেমন্তের বাড়ানো বলে বক্সের মধ্যে গিয়েও নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি রনি।

ফরোয়ার্ড জীবনকে তুলে নিয়ে মিডফিল্ডার সোহেল রানাকে নামান বাংলাদেশ কোচ। তাতে বলের নিয়ন্ত্রণ স্বাগতিকদের পায়ে থাকলেও গোলের দেখা মেলেনি।।

৮৩তম মিনিটে মোনায়েম রাজুর লম্বা করে বাড়ানো বলে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তাড়াহুড়ো করে পোস্টের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন রনি।

গোলের আশায় হেমন্তকে তুলে নিয়ে ফরোয়ার্ড জুয়েল রানাকে নামান স্বাগতিক কোচ। এরপর থ্রু বলে জামালের গতিময় শট সরাসরি নেপাল গোলরক্ষকের কাছে যায়।

বক্সের বাইরে থেকে মামনুলের নেওয়া ফ্রি-কিক গ্যালারিতে আসা সমর্থকদের হতাশ করে পোস্টের উপর দিয়ে উড়ে গেলে গোলশূন্যভাবেই শেষ হয় ম্যাচ।

এর আগে, শ্রীলঙ্কার কাছে গ্রুপের শেষ ম্যাচে ২-১ ব্যবধানে হেরে ছিটকে পড়ে মালয়েশিয়া এবং শেষ চার নিশ্চিত হয়ে যায় নেপাল ও স্বাগতিক বাংলাদেশের।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুক্রবার প্রথমার্ধে এলএএনডি বান্দ্রার গোলে এগিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ৬২তম মিনিটে চালানা চামেরার ক্রসে প্লেসিং শটে লক্ষ্যভেদ করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মিডফিল্ডার এসি সানজানা।

৮২তম মিনিটে বদলি খেলোয়াড় মোহাম্মদ হাদিনের ক্রসে মাপা হেডে লক্ষ্যভেদ করে মালয়েশিয়াকে ম্যাচে ফেরান নুর ফজলে ইলিয়াস। কিন্তু বাকি সময়ে আর কোনো গোল না পাওয়ায় ছিটকে পড়া এড়াতে পারেনি দলটি।

দুই ম্যাচে চার করে পয়েন্ট নিয়ে গোল পার্থক্যে ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ, দ্বিতীয় নেপাল। শ্রীলঙ্কা ও মালয়েশিয়ার বিদায়ে শুক্রবার বাংলাদেশ-নেপালের ম্যাচটি তাই হয়ে গেছে গ্রুপ সেরা হওয়ার লড়াই।

বাংলাদেশের কাছে ৪-২ গোলে হারের পর নেপালের কাছেও ১-০ গোলে হারে শ্রীলঙ্কা। এই দুই হারে গোল্ড কাপ থেকে ছিটকে পড়া শ্রীলঙ্কার জন্য মালয়েশিয়ার বিপক্ষের ম্যাচটি ছিল অন্তত একটি জয় নিয়ে দেশে ফেরার শেষ সুযোগ।

মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করা ফেলডা ইউনাইটেড এফসিকে হারিয়ে তিন পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থেকে দেশে ফিরছে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের সর্বশেষ আসরে সেমি-ফাইনালে খেলা দলটি।

প্রথম দুই ম্যাচে দুই পয়েন্ট পাওয়া মালয়েশিয়ার গোল্ড কাপের সেরা চারে উঠতে হলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততেই হতো। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় তা আর হয়ে ওঠেনি; উল্টো গ্রুপে চতুর্থ স্থানে থেকে দেশে ফিরছে তারা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত