স্পোর্টস ডেস্ক

১০ এপ্রিল, ২০১৭ ১৬:০৪

মেসির সতীর্থরাই ভোগাবেন মেসিকে!

থিয়াগো মেসি গুটি গুটি পায়ে ছুটছেন, তাঁকে ধরতে পেছন পেছন যাচ্ছেন দানি আলভেজ। দুজনেরই মুখে একগাল হাসি। এ দুজনের একটু পেছনে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখছেন লিওনেল মেসি। বার্সেলোনার কোনো শিরোপা জয় উদ্‌যাপনের একটা অংশ হয়ে গেছে এ ছবিটা। কিন্তু কাল যখন মাঠে ছুটবেন লিওনেল মেসি, তখন কিন্তু তাঁর পেছনে থাকা আলভেজের চেষ্টা থাকবে যে কোনোভাবেই হোক বার্সার আরেকটা শিরোপা জয় আটকানো। মেসিকে আটকানো!

জুভেন্টাসের মাঠে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে দেখা হচ্ছে বার্সেলোনা ও জুভেন্টাসের। যে ম্যাচের আগে প্রতিপক্ষকে রীতিমতো প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ম্যাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি, ‘আমার কাছে বার্সেলোনা ঠিক আগের বার্সেলোনা। যে দলে মেসি, ইনিয়েস্তা, সুয়ারেজ ও নেইমার আছে, তারা খুব কম ম্যাচে খারাপ খেলে না।’ জুভেন্টাস কোচের কথা মিথ্যা নয়। কিন্তু ‘আগের বার্সেলোনা’ কথাটা সম্ভবত মানতে চাইবেন না কেউ। এ দলে যে দানি আলভেজ নেই!

সর্বশেষ দুই দল যখন মুখোমুখি হয়েছিল, সেবার আলভেজ খেলেছেন বার্সেলোনার জার্সিতে। ২০১৫ সালের সে ফাইনালে বার্সেলোনা জিতেছিল ৩-১ গোলে। এ মৌসুমের শুরুতে সবাইকে চমকে দিয়ে যখন বার্সা ছাড়লেন আলভেজ, তখন মেসির চেয়ে বেশি দুঃখ বোধ হয় কেউ পাননি। বার্সার জার্সিতে আলভেজই তাঁকে সবচেয়ে বেশি গোলে সহায়তা করেছিলেন। যে দলে জাভি, ইনিয়েস্তা কিংবা সুয়ারেজ, নেইমাররা খেলেছেন—সে দলে একজন রাইটব্যাকের এমন পরিসংখ্যানই তো বলে দেয়, কতটা গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় এই ব্রাজিলিয়ান।

সবচেয়ে বড় কথা, মেসির সঙ্গে তাঁর যেন আত্মার সম্পর্ক ছিল। আলভেজ মজা করে বলেছিলেন, তাঁর স্ত্রী নাকি প্রায়ই অভিযোগ করেন। স্ত্রীর যে চেয়ে মেসির সঙ্গে আলভেজের বোঝাপড়া ভালো! আলভেজের বিদায়ে সবচেয়ে বেশি কষ্ট মেসিই পেয়েছিলেন। আলভেজও কি পাননি?

আলভেজের দুঃখটাও এখানেই, তাঁর মতো খেলোয়াড়কে সম্মান দেয়নি বার্সেলোনার কর্মকর্তারা। সে জন্যই মুফতে চলে এসেছেন ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নদের দলে, ‘যেখানে সবাই আমাকে চায়, সেখানেই আমি থাকব; নইলে চলে যাব। বার্সেলোনা থেকে ফ্রিতে চলে আসাটা ছিল দারুণ বদলা। শেষ তিন বছর আমাকে বারবার শুনতে হয়েছে, আলভেজ চলে যাচ্ছে কিন্তু পরিচালকদের কেউ এগিয়ে এসে কথা বলেনি। ওরা মিথ্যুক, অকৃতজ্ঞ। আমাকে কোনো সম্মান দেখায়নি।’
আলভেজ চলে যাওয়ায় বার্সেলোনাকে কী পরিমাণ ধুঁকতে হচ্ছে, সেটা তো এ মৌসুমে দেখাই যাচ্ছে। রক্ষণের ডান দিকের দুর্বলতা প্রতি ম্যাচেই চোখে পড়ছে। সার্জি রবার্তো কিংবা অ্যালেক্স ভিদালরা কোনোভাবেই আলভেজের শূন্যতা পূরণ করতে পারছেন না। কাল সেটা হয়তো আরও ভালোভাবে বুঝিয়ে দিতে চাইবেন আলভেজ।

মেসিদের অবশ্য শুধু আলভেজই ভোগাবেন সেটা ভাবার কোনো কারণ নেই। মেসির খুব কাছের আরও দুজন যে আছেন জুভেন্টাসে। এরা আবার প্রাক্তন নন, মেসির বর্তমান সতীর্থ। আর্জেন্টিনার ‘ভবিষ্যৎ মেসি’ পাওলো দিবালা ও জুভেন্টাসের জার্সিতে গোলের পর গোল করে যাওয়া গঞ্জালো হিগুয়েইন। এই দুজনও যে কাল নিজেদের উপস্থিতি বুঝিয়ে দিতে চাইবেন সবাইকে!
সূত্র: এএফপি

আপনার মন্তব্য

আলোচিত