স্পোর্টস ডেস্ক

০৩ মে, ২০১৭ ১৮:২২

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি না খেললে ৬ বছরে ১৪টি বড় টুর্নামেন্ট খেলা হবে না ভারতের!

আইসিসির বিরুদ্ধে বিদ্রোহই ঘোষণা করতে চেয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) একটা অংশ। আইসিসিকে আইনি নোটিশ পাঠানোর তোড়জোড় নিতে অনুরাগ ঠাকুর, এন শ্রীনিবাসনের মতো ক্ষমতাচ্যুত ক্রিকেটকর্তারা কাল টেলিকনফারেন্সে যুক্ত হয়ে চাপ দিচ্ছিলেন।

কিন্তু বিসিসিআইয়ের অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসক কমিটির (সিওএ) প্রধান বিনোদ রাই তাঁদের নিবৃত্ত করেন। শুধু তা-ই নয়, রাই এই সতর্কবার্তাও জানিয়েছেন, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বয়কট করলে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আইসিসির কোনো ইভেন্টে হয়তো অংশ নিতে পারবে না ভারত।

এই ছয় বছরে দুটি বিশ্বকাপ (২০১৯, ২০২৩), দুটি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি (২০১৭, ২০২১), দুটি নারী বিশ্বকাপ (২০১৭, ২০২১), তিনটি মহিলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (২০১৮, ২০২০, ২০২২), ২০২০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, তিনটি অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ ও আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (২০২১) আছে। ১৪টি বড় ইভেন্ট। তাই হুট করে কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে রাজি নয় বিসিসিআইয়ের অন্তর্বর্তী কমিটি।

আইসিসির সঙ্গে সব সদস্য দেশেরই একটা চুক্তি আছে। এটিকে বলা হয় মেম্বার্স পার্টিসিপেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (এমপিএ)। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বয়কটের অর্থ হচ্ছে এই ‘এমপিএ’ ভঙ্গ করা। তাহলে পেতে হতে পারে সেই শাস্তি।

কাল শ্রীনি-অনুরাগরা মিলে বিসিসিআইয়ের ১২ সদস্য এই টেলিকনফারেন্সে যুক্ত হন। সকাল নয়টার দিকে বিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব অমিতাভ চৌধুরী বিনোদ রাইকে ফোন করে জানান, কয়েকজন সদস্য এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইছেন। এরপর দৃশ্যপটে হাজির হন অনুরাগ। তিনি আইসিসিকে নোটিশ পাঠানোর ব্যাপারে নিজের যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন। তবে রাই তা নাকচ করে বলেন, মাত্র ১২ সদস্য বলতে তা হবে না। বিশেষ সাধারণ সভায় ৩০ সদস্য সর্বসম্মতভাবে রাজি হলেই আইসিসিকে নোটিশ পাঠানো সম্ভব। ৭ মে ডাকা হয়েছে সেই বিশেষ সাধারণ সভা।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, বিসিসিআইয়ের ক্ষমতাচ্যুতরা জনমতকে পাশে পেতে জনপ্রিয় পথে হাঁটতে চান। ভারত আইসিসি থেকে বঞ্চিত হয়েছে, এই বঞ্চনাবোধ থেকে তারা ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থাকে এক হাত দেখিয়ে দেওয়ারই পক্ষে। অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসক কমিটি ভারতের দাবিদাওয়ার পক্ষে জোরালো কণ্ঠে কথা বললেও আইসিসির সঙ্গে এত বড় বিরোধে যেতে নারাজ। ৭ মে পরিস্থিতি আরও পরিষ্কার হবে। বিসিসিআইয়ের বেশির ভাগ সদস্য কোন পথে হাঁটতে চান, তখনই তা জানা যাবে।

বিসিসিআইয়ের অন্তর্বর্তী কমিটি যে বয়কটের মতো কঠোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে, তার আঁচ পাওয়া গেছে কমিটির অন্যতম সদস্য রামচন্দ্র গুহর টুইটে। ১ মে পরপর তিনটি টুইট করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, হুমকি দিয়ে বড় ক্রিকেট জাতি হওয়া যায় না। আরেকটিতে তিনি বলেছেন, ‘বিসিসিআইকে বেছে নিতে হবে, তারা কি ক্রমবর্ধমান এক খেলার জনপ্রিয় রাজা হবে, নাকি মৃতপ্রায় খেলার ঘৃণিত ডন (মাফিয়া নেতা) হবে।’
সূত্র: ক্রিকইনফো

আপনার মন্তব্য

আলোচিত