ক্রীড়া প্রতিবেদক

১১ অক্টোবর, ২০১৭ ০৯:১৯

মেসির হ্যাটট্রিকে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা

অধুনা ফুটবলের জাদুকর তকমা নিজের করে নিয়েছিলেন আগেই। তার ফুটবল শৈলিতে বিশ্ব মেতে আছে অনেক দিন ধরেই। একের পর এক শিরোপা জিতেছেন, হয়েছেন ম্যাচ সেরা; বিশ্বসেরাও। এমন জাদুকর লিওনেল মেসি বিশ্বকাপে খেলবেন না- তা কী হয়? হয় না! তাই নিজেই গড়ে নিলেন বিশ্বকাপের সিঁড়ি; দলকে পৌঁছে দিলেন বিশ্বকাপে।

বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচের আগে ফুটবলবিশ্বের জিজ্ঞাসা ছিল আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে খেলতে পারবে কীনা। সারাবিশ্ব যখন চোখ রাখছিল ইকুয়েডরের বিপক্ষের ম্যাচের দিকে, তখনই মেসি নিজেকে ফের প্রমাণের মঞ্চ হিসেবে নিলেন ওই ম্যাচকেই। ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে থাকা দল নিয়ে দলকে জেতালেন, নিজেও জিতলেন। করলেন হ্যাটট্রিক।

এনিয়ে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ৪র্থ হ্যাটট্রিক করলেন মেসি। ফল তাই ইকুয়েডরকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সরাসরি বিশ্বকাপ নিশ্চিত করল আর্জেন্টিনা।

ড্র করলেও হয়তো বাদ পড়ে যেতে হবে, জিতলেও সরাসরি নিশ্চিত নয় বিশ্বকাপ। এমন কঠিন সমীকরণ ছিল আর্জেন্টিনার সামনে। ছিল ইকুয়েডরের পর্বতচূড়ায় খেলার কঠিনতম চ্যালেঞ্জ। যেখানে আর্জেন্টিনার সর্বশেষ জয় ছিল ১৬ বছর আগে। পুরো পর্বতমালা আর্জেন্টিনার কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে ম্যাচের মাত্র ৪০ সেকেন্ডে গোল করল ইকুয়েডর!

এই অবস্থায় দ্রুত গোল না পেলে মানসিকভাবেই ভেঙে পড়ত আর্জেন্টিনা। বলের অস্বাভাবিক আচরণের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ইকুয়েডর পাল্টা আক্রমণে আরও কয়েকবার ত্রাসও ছড়াল। সেই চাপ থেকে দলকে বের করে আনতে জাদুকরী কিছু একটা করতেই হতো মেসিকে। মেসি পারবেন? নাকি রাশিয়া বিশ্বকাপটা মেসিকে ছাড়াই দেখতে হবে? ভাষ্যকারের গলাও তখন কাঁপছে।

১২ মিনিটে জন্ম নিল প্রথম জাদুকরী মুহূর্তটি। ড্রিবল করে বল বাড়ালেন বাঁ প্রান্তে থাকে অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া দিকে। দারুণ বোঝাপড়ায় ওয়ান-টু। ডি মারিয়ার বাড়িয়ে দেওয়া বলে বক্সের ভেতর থেকে সেই চেনা বাঁ পায়ের শট। উদ্যাপন করার সময় অতটা নেই। বল নিজেই জাল থেকে কুড়িয়ে বসালেন সেন্টারে।

২০ মিনিটে এবার মেসির একার জাদু। ইকুয়েডর ডিফেন্ডারের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে বক্সের বা প্রান্তে ঢুকে জোরালো কিন্তু মাপা শটে ক্রসবারের নিচ দিয়ে পাঠালেন জালে। ২-১!

এগিয়ে থাকলেও স্বস্তিতে নেই আর্জেন্টিনা। অন্তত ২ গোলের লিড তো চাই। সেটাও এনেই দিয়েছিলেন প্রায়। ৩২ মিনিটে দুর্দান্ত থ্রু বল। ডি মারিয়া রক্ষণের ফাঁদ গলে বেরিয়েও গেলেন। সামনে কেবল গোলরক্ষক। কিন্তু বলটা চিপ করতে পারলেন না ডি মারিয়া।

৬২ মিনিটে বক্সের মাথায় বল পেয়ে তিন ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে বল ভাসালেন হাওয়ায়। বল জড়াল জালে। আর্জেন্টিনাও সরাসরি পৌঁছে গেল বিশ্বকাপে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত