ক্রীড়া প্রতিবেদক

০৮ নভেম্বর, ২০১৭ ২০:৩৬

তাসকিনের দুর্দান্ত ফেরা

দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষে ফিরে সেই রাতেই বিয়ে করে সকলকেই অবাক করে দেন তাসকিন। হাত থেকে যায়নি এখনো মেহেদির দাগ। তা নিয়েই বিয়ের পর প্রথম টুর্নামেন্ট খেলছেন তিনি।


উইকেটের স্বাদ কেমন তা তিনি ভুলতে বসেছিলেন। উইকেট না পেতে পেতে চওড়া কাঁধ নুয়ে পড়তে যাচ্ছিল। পুরো দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে রয়েছেন উইকেট ছাড়া। আর এবারের বিপিএলে প্রথম ম্যাচও তেমন ভালো যায় নি তার। তবে প্রথম ম্যাচে না পারলেও পরের ম্যাচেই হিরো তাসকিন আহমেদ। এক ওভারে দুটি সহ ম্যাচে নিয়েছেন তিন উইকেট। করেছেন গুরুত্বপূর্ণ রান আউট। তাতে টুর্নামেন্টের প্রথম জয় পেয়েছে চিটাগাং ভাইকিংস। হয়েছেন ম্যাচ সেরা।

কিভাবে সম্ভব হলো হঠাৎ এমন ফেরা? শোনা যাক তাসকিনের মুখেই, 'সত্যি বলতে, আমি খুব খুশি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরটা আমাদের দলের জন্য খুব খারাপ ছিল। এখানে প্রথম ম্যাচে নার্ভাস ছিলাম। তবে গত রাতে আমি ম্যাচ নিয়ে ভাবছিলাম। দেখলাম ভালোই তো করছিলাম। ইতিবাচক হয়ে উঠি তাতে।' অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হকও যে একটা ভূমিকা পালন করেছেন তা বলতে ভোলেননি তাসকিন, 'আমার অধিনায়কের সমর্থন পেয়েছি। তাতেই মনের ভেতর ভালো একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে।'

রান তাড়ায় রংপুর রাইডার্স ছিল ঠিক পথেই। বাদ সাধেন তাসকিন। ছন্দে থাকা শাহরিয়ার নাফীসকে বোল্ড করে শুরু। পরের বলে ফিরিয়ে দেন সামিউল্লাহ শেনওয়ারিকে। এরপরের বলেও উইকেট পড়েছে তবে হ্যাটট্রিক হয়নি। রংপুরের টপ স্কোরার রবি বোপারাকে করেছেন রান আউট। পরের ওভারে পেয়েছেন আরেক উইকেট। এক স্পেলেই বাজিমাত,  ‘আমি চিন্তা করেছি খুবই ভালো একটা ব্যাটিং ট্র্যাক এখানে। যত মিক্স আপ করা যায়, স্লোয়ার বাউন্সার ইয়র্কার যত বেশি করা যায়। একই লেংথের দুইটি থেকে তিনটি বল করলেই কিন্তু বাউন্ডারি। এজন্য এর আগের দুইটা বল শর্ট অব লেংথে বাউস্নার মেরেছি। ওই বলে প্ল্যান করেছি পারফেক্ট ইয়র্কার করার জন্য, সেটা নিখুঁত হয়েছে।’

এই ম্যাচ মাথা খাটিয়ে বল করতে দেখা গেছে তাকে। ফলও মিলেছে হাতেনাতে, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা টুরে চেষ্টা করেছি, যত খেলছি অভিজ্ঞতা হয়েছে আস্তে আস্তে শিখছি। এই জিনিসগুলো আসলে ভুল থেকে শিখা। এখনও আমি যদি বলি অনেক শিখে গেছি সেটা কিন্তু নয়। আমি এখনো ৫০ ভাগ অর্জন করতে পেরেছি, আরও ৫০ ভাগ বাকি আছে। সেটার জন্য কাজ করছি। সিনিয়ররা, মাশরাফি ভাই, রুবেল ভাই সবার সাথে কথা বলি। বাকিরাও হেল্প করে আমাকে।’

অনেকের অনেক বুদ্ধি না নিয়ে এখন নাকি নিজের বুদ্ধিতেই বল করছেন। তাই পেয়েছেন সাফল্য, ‘ আজ সকালে মিসবাহ ভাই নাস্তার টেবিলে একটা কথা বলেছেন, ফকির হলে নিজের বুদ্ধিতে ফকির হও। মরলে নিজের বুদ্ধিতে বল করে মার খাও। মানুষের কথা শোনার চেয়ে আমি আমার মনের কথা শোনার চেষ্টা করেছি।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত