স্পোর্টস ডেস্ক

০৭ জুন, ২০১৫ ০৩:০০

ইউরোপ সেরা বার্সেলোনা

নেইমারের শটটি যখন জালে জড়ালো, তখনই বেজে ওঠলো শেষ বাঁশি। বার্সেলোনা শিবিরে তখন শুরু হয় গেছে উৎসব; উয়েফা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উৎসব!

ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতা উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতেছে স্পেনের বার্সেলোনা। ফাইনালে তারা য়ুভেন্টাসের বিপক্ষে জয় পেয়েছে ৩-১ গোলে। দলের সবচেয়ে বড় তারকা লিওনেল মেসিগোল পাননি তবু তাতেও থামেনি বার্সেলোনার জয়রথ। গোল করেছেন ইভান রাকিতিচ, লুইস সুয়ারেস ও নেইমার। য়ুভেন্টাসের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন আলভারো মোরাতা থেকে।

শনিবার বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে চতুর্থ মিনিটে বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেন রাকিতিচ। সম্পূর্ণ দলীয় প্রচেষ্ঠার ফল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের তৃতীয় দ্রুততম গোলটি।

জর্দি আলবার কাছ থেকে বল পাওয়া নেইমার খুঁজে পান ছুটে ডি বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়া আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাকে। তার পাস থেকে জানলুইজি বুফ্ফনকে পরাস্ত করে বল জালে পাঠান ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার রাকিতিচ।

সপ্তম মিনিটে প্রথম সুযোগটি পায় য়ুভেন্টাস। মোরাতার পাস থেকে উপর দিয়ে মেরে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নদের হতাশ করেন আর্তুরো ভিদাল। পিছিয়ে পড়ার পর আক্রমণ ছাড়া গতি ছিল না মাস্সিমিলিয়ানো আলেগ্রির শিষ্যদের। অসাধারণ এক মৌসুম কাটানো মেসি-সুয়ারেস-নেইমারদের সামলে আক্রমণে যাচ্ছিল তারা। মাঝমাঠ থেকে দ্রুত গতিতে উঠে সুযোগ তৈরি করছিলেন পাট্রিস এভরা, কার্লোস তেভেসরা। কিন্তু মোরাতা, ভিদালরা সেগুলো লক্ষ্যে পাঠাতে পারেননি।

৪০তম মিনিটে দুইবার হতাশ হতে হয় লুইস সুয়ারেসকে। প্রথমবার অল্পের জন্য লক্ষ্যে রাখতে পারেননি উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার। তার পরের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন য়ুভেন্টাসের ৩৭ বছর বয়সী গোলরক্ষক বুফ্ফন। ৪৪তম মিনিটে একটি দুরূহ সুযোগ এসেছিল সুয়ারেসের সামনে। নেইমারের ক্রস খুঁজে পায় ডি-বক্সে অরিক্ষিত থাকা এই স্ট্রাইকারকে। বল একটু বেশি ওপরে থাকায় সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেননি তিনি।

বার্সেলোনার আক্রমণের ধাক্কা সামলে ৫৫তম মিনিটে সমতা ফেরান মোরাতা। স্টেফান লিখটস্টাইনারের পাস থেকে তেভেসের জোরালো শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান বার্সেলোনার গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগান। তবে শেষ রক্ষা হয়নি, ফিরতি বলে তাকে পরাস্ত করে জাল খুঁজে নেন রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক স্ট্রাইকার মোরাতা।

৬৮তম মিনিটে দ্বিতীয়বার বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেওয়ার কৃতিত্ব সুয়ারেসের। প্রায় মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে ডি-বক্সের ভেতর থেকে জোরালো শট নেন মেসি। ঝাঁপিয়ে তাকে ব্যর্থ করে দেন বুফ্ফন। কিন্তু ফিরতি বল জালে পাঠিয়ে উল্লাসে মাতেন সুয়ারেস।

তিন মিনিট পর বল জালে পাঠান নেইমার। আলবার ক্রস থেকে ব্রাজিলের এই তারকার হেড তার নিজের ডান হাতে লেগে বিভ্রান্ত করে য়ুভেন্তাসের গোলরক্ষককে। তাই হ্যান্ডবলের জন্য বাতিল হয় এই গোল।

এগিয়ে যাওয়ার পর ছন্দে ফিরে বার্সেলোনা। স্বরূপে ফিরেন নেইমার। তাতেই বাড়ে আক্রমণের ধার। তবে ক্ষণিকের জন্যও হাল ছাড়েনি ইতালির দলটি। ৮২তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ এসেছিল জেরার্দ পিকের সামনে। বুফ্ফনকে একা পেয়েও ওপরে মেরে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি।

এক গোলে পিছিয়ে থাকা য়ুভেন্টাস মরিয়া হয়ে উঠে শেষ দিকে। এই সময়ে তাদের সামনে চীনের প্রাচীর হয়ে উঠেন টের স্টেগান। ৮৭, ৮৮ ও ৯১তম মিনিটে য়ুভেন্টাসের তিনটি আক্রমণ ব্যর্থ করে দেন বার্সেলোনার গোলরক্ষক।

যোগ করা সময়ে নেইমারের গোলে নিশ্চিত হয়ে যায় প্রথম দল হিসেবে বার্সেলোনার দ্বিতীয়বার ট্রেবল জয়। বার্সেলোনা এর আগে লা লিগা ও কোপা দেল রের শিরোপা জেতে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রানার্সআপ য়ুভেন্টাস জেতে সেরি আ ও কোপা ইতালিয়ার শিরোপা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত