ক্রীড়া প্রতিবেদক

১৬ জানুয়ারি, ২০১৯ ২২:৩৩

ঘরের মাঠে জয় তুলে নিল সিলেট

আসরের দ্বিতীয় ও নিজেদের ঘরের মাটিতে প্রথম জয় তুলে নিল সিলেট। বুধবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএল সিলেট পর্বের চতুর্থ ম্যাচে সিলেট সিক্সার্স ২৭ রানে হারায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্সকে।

এর আগে ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে সিলেটকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রন জানান রংপুর দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।

টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই লিটন দাস ও সাব্বির আহমেদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৬ ওভারে সংগ্রহ করে ৬১ রান। পরে এ বানের মিছিলে যোগ দেয় সিলেট সিক্সার্সের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার।

এ তালিকা থেকে বাদ যাননি নিকোলাস পুরানও। তাঁদের ব্যাটে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে সিলেট সিক্সার্স সংগ্রহ করেন ১৮৭ রান। এবারের বিপিএলে এটাই সিলেটের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। সব মিলে তৃতীয় সর্বোচ্চ।

এবারের বিপিএলে ব্যাট হাতে একদমই খারাপ যাচ্ছিল লিটন দাসের। আগের ৪ ম্যাচে খেলেছেন ১, ০, ৯ ও ৬ রানের ইনিংস! টপ অর্ডারের একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে এই স্কোরের দিকে তাকিয়ে লিটন নিজেই হয়তো লজ্জা পাচ্ছিলেন! অধিনায়ক ওয়ার্নারেরও খুব ভালো কাটেনি। তিনি খেলেছেন ১৪, ৫৯, ৭ ও ০ রানের ইনিংস।

এই হতাশাকে পেছনে ফেলে দুজনেই আজ জ্বললেন। ওপেনিংয়ে নামা লিটন রানআউটের খড়্গে কাটা পড়ার আগে খেলেছেন ৪৩ বলে ৭০ রানের ইনিংস। ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ১ ছক্কা ও ৯ চারে। অধিনায়ক ওয়ার্নারের ব্যাটেও ঝড় বয়েছে একই রকম। তিনি ৩৬ বলে খেলেছেন অপরাজিত ৬১ রানের ইনিংস। ২টি ছক্কা ও ৬টি চার মেরেছেন তিনি।

টস জিতে রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক এমপি মাশরাফি টুর্নামেন্টের নিয়ম মেনেই ফিল্ডিং নেন প্রথমে। কিন্তু তার সিদ্ধান্তকে বুমেরাং প্রমাণ করে সিলেট উদ্বোধনী জুটিতেই তুলে ফেলে ৭৩ রান। ২০ বলে ২০ রান করা সাব্বির রহমানকে ফিরিয়ে সিলেটের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন বেনি হাওয়েল। এরপর লিটন ও ওয়ার্নার মিলে দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৫৬ রানের জুটি, মাত্র ৩৬ বলে।

দলকে ১২৯ রানে রেখে লিটন ফিরে যাওয়ার পর ওয়ার্নার জুটি বাঁধেন নিকোলাস পুরানের সঙ্গে। ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান উইকেটে এসেই ঝড় তুলেছিলেন। কিন্তু তার ঝড় বেশিক্ষণ বইতে দেননি শফিউল ইসলাম। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে পুরানের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন তিনি। তবে আউট হওয়ার পুরান খেলেছেন ১৫ বলে ২৬ রানের ইনিংস। শেষ দিকে নেমে আফিফ হোসেন ১ চারে ৩ বলে ৬, জাকির হোসেন ০। অলক কাপালিও রানের খাতা খুলতে পারেননি।

শেষ ওভারে চমক দেখিয়ে দুই উইকেট তুলে নিয়েছেন শফিউল। সব মিলে তিনি উইকেট নিয়েছেন ৩টি। এছাড়া একটি উইকেট নিয়েছেন হাওয়েল। অন্য উইকেটটি রানআউট।

সিলেটের দেয়া ১৮৮ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা একদমই মনমতো করতে পারেনি রংপুর। সোহেল তানভীরের করা প্রথম ওভার কোনোভাবে সামাল দিলেও, দ্বিতীয় ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন ২২ বছর বয়সী মেহেদি রানা। ওভারের তৃতীয় বলে মেহেদি মারুফকে ফেরানোর পরে, শেষ বলে তিনি সাজঘরের পথ দেখান ইংলিশ ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স হেলস।

মেহেদি মারুফ ৫ বলে ৩ রান করলেও রানের খাতা খুলতেই ব্যর্থ হন হেলস। তৃতীয় ওভারে 'বিগ ফিশ' ক্রিস গেইলকে উইকেটের পেছনে ক্যাচে পরিণত করেন সোহেল তানভীর। ৭ বল খেলে ১ চারের মারে ৭ করেন গেইল।

রংপুরের স্কোর তখন ২.৩ ওভারে ১১ রানে ৩ উইকেট। এরপরই পাল্টা আক্রমণ চালান রিলে রুশো এবং মোহাম্মদ মিঠুন। দুজনের ৫৫ বলে ৮৯ রানের জুটিতে বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন রুশোই। আসরে নিজের তৃতীয় ফিফটি করে রুশো সাজঘরে ফেরেন দলীয় ১০০ রানের মাথায়। ৩টি চার ও ৪টি ছক্কার মারে মাত্র ৩২ বলে এ রান করেন তিনি।

রুশো ফিরে যাওয়ার পরই কার্যত শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। তবে অধিনায়ম মাশরাফি মর্তুজার সঙ্গে মোহাম্মদ মিঠুন লড়াই চালিয়ে যান কিছুক্ষণ। ২৯ বলে ৩৫ রান করে আউট হয়ে যান মিঠুন। ষষ্ঠ উইকেটে বেনি হাওয়েলের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মাশরাফি। ১৭তম ওভারে হাওয়েল ১৩ রান করে ফিরে গেলে ভেঙে যায় সে জুটিও।

শেষপর্যন্ত একাই উইকেটে টিকে থাকেন অধিনায়ক মাশরাফি। একপ্রান্তে ২৭ বলে ৩৩ রান করে অপরাজিত থেকে দেখেন নিজ দলের ২৭ রানের পরাজয়। ষষ্ঠ ম্যাচে রংপুরের চতুর্থ পরাজয় এটি। অন্যদিকে পঞ্চম ম্যাচে দ্বিতীয় জয় সিলেটের।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত